রাজশাহীতে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের সঙ্গে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জেলা পুলিশ লাইন্সে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে বিভাগীয় কমিশনার ড. খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আলমগীর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও সংস্থার প্রধান, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং নানা শ্রেণি-পেশার সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়ত ইসলামী রাজশাহী মহানগরী শাখা একটি র্যালি বের করে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজন করা হয়েছে রক্তদান কর্মসূচির। মহল্লায় মহল্লায় বাজানো হচ্ছে দেশাত্মবোধক গান। আয়োজন রয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সকাল ৭ টা ২০ মিনিটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিসহ হাজারো সাধারণ মানুষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের এবার অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠান না থাকলেও আছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
সকাল নয়টায় সার্কিট হাউজ চত্বরে জেলা পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার। সকাল দশটায়জেলা শিল্পকলা একাডেমিপ্রাঙ্গণেআড়ম্বরপূর্ণ বিজয় মেলার উদ্বোধন করাহয়। চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের এ মেলায় বিপুল সংখ্যক দর্শণার্থী অংশগ্রহণ করেন।এরপর রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে ফুল ও উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে একই স্থানে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্ক, যাদুঘরে বিনা টিকেটে শিশুদের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সুবিধামতো সময়ে হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদন, শিশু একাডেমী, বৃদ্ধাশ্রম, ছোটমনি নিবাস, শিশুপল্লী ও বেসরকারি এতিম খানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিজয় দিবস উপলক্ষে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করে।
এছাড়া মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।