বিডি ঢাকা ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্তিপুরে পাগলা নদীতে মাঘী বান্নী গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। চন্দ্র মাসের তারিখ হিসাবে প্রতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল বয়সের মানুষ তর্ত্তিপুর শ্মশানঘাট এলাকায় পৌরাণিক জহ্নু মুনির আশ্রমের কাছে এসে তারা স্নান করেন এবং পাপ মোচনের আশায় প্রার্থনা করেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি।
মঙ্গলবার ভোর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, নওগাঁসহ দূর-দূরান্ত থেকে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, মিশুক, অটোরিকশা ও রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পৌরাণিক জহ্নু মুনির আশ্রমে আসেন। দুপুর পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের আসা অব্যাহত ছিল।
সকলে গঙ্গাস্নান পর্ব শেষ করে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। খাবার তালিকায় থাকে শিবগঞ্জের বিখ্যাত চমচমসহ অন্যান্য মিষ্টান্ন দ্রব্য, রাজারামপুর ও নসিপুরের দই, রহনপুরের মুড়ি ও চিড়া এবং ভোলাহাটের সাগরকলা।
তর্ত্তিপুর মহাশ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমল কুমার ত্রিবেদী জানান, পৌরাণিক যুগ থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম তীর্থস্থান তর্ত্তিপুর গঙ্গাস্নানে বিভিন্ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্নানকার্য সম্পন্ন করেন। এ স্নান করলে মানবজীবনের পাপমোচন ও অকল্যাণ দূর হয়। এ বছর লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম ঘটেছে। তিনি বলেন- এ গঙ্গাস্নান অধিকাংশ বছরই মাঘ মাসে অনুষ্ঠিত হয় বলে একে মাঘী বান্নী স্নান বলে। কিন্তু চাঁদের ওপর নির্ভর করে কোনো কোনো বছর ফাল্গুন মাসেও গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এদিকে গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে নদীর পাড়ে মেলা বসে। দিনব্যাপী মেলায় প্রসাধনী, কাঠের আসবাবপত্র, হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন উপকরণ, মিষ্টি ও খাবারসহ বিভিন্ন রকমের দোকান শোভা পায়। এছাড়া এ উপলক্ষে পূজা এবং পালাক্রমে কীর্তনেরও আয়োজন করা হয়।
গঙ্গাস্নানকে ঘিরে গোটা তর্ত্তিপুর এলাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের মিলনমেলায় পরিণত হয়।