বিডি ঢাকা ডেস্ক
আর্জেন্টিনার বন্দর নগরী বাহিয়া ব্লাঙ্কায় মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যায় ঘরবাড়ি এবং হাসপাতাল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া এক হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির।
আট ঘন্টা টানা বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষকে জোসে পেন্না হাসপাতাল খালি করতে হয়েছে।
টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, হাসপাতালের নবজাতক ইউনিট থেকে চিকিৎসাকর্মীরা শিশুদের সরিয়ে নিচ্ছেন। সেখানে উদ্ধারকাজে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
মেয়র ফেদেরিকো সুসবিয়েলসের কার্যালয় জানিয়েছে, রাজধানী বুয়েনস আইরেস থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার (প্রায় ৩৭৫ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত শহরটি থেকে প্রায় ১ হাজার ৩২১ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাতীয় সরকার ১০ বিলিয়ন পেসো (প্রায় ৯.২ মিলিয়ন ডলার) জরুরি সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে।
বুয়েনস আইরেস প্রদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী জাভিয়ের আলোনসো জানিয়েছেন, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শহরে ৪০০ মিলিমিটারেরও (১৫ ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে যা প্রায় এক বছরের সমান। এটা নজিরবিহীন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে ১৯৩০ সালের দিকে বাহিয়া ব্লাঙ্কায় বড় ধরনের ঝড় আঘাত হানে। সে সময় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শহরের বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৈদুতিক বিপর্যয় বা বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে যে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত শহরে হেলিকপ্টার, ক্যানো, অ্যাম্বুলেন্স এবং খাদ্য, পানি ও সরঞ্জাম বহনকারী ট্রাক পাঠাচ্ছে।
উপকূলরক্ষীরা নৌকা দিয়ে উদ্ধারকাজে সহায়তা করছেন। ফ্লাভিয়া ভিয়েরা রোমেরো নামের এক বাসিন্দা বলেন, বৃষ্টি হচ্ছিল এবং হঠাৎ আমরা দেখতে পেলাম রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। আমার বাড়িতে প্রায় দেড় মিটার পর্যন্ত পানি উঠেছে। তিনি তার বাচ্চাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
সেখানে নতুন করে ঝড় আঘাত হানতে পারে বলেও সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ। বাহিয়া ব্লাঙ্কার অন্যতম প্রধান হাসপাতাল জোসে পেন্নার নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের ওয়ার্ডগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে সেখানকার রোগী এবং কর্মীদের জরুরিভিত্তিতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।