বিডি ঢাকা ডেস্ক
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় রমজানে পর্যটকের অভাব দেখা দিয়েছে। করোনার পরবর্তী সময়ে পর্যটন শিল্পে কিছুটা গতি এলেও সম্প্রতি রমজান মাসকে কেন্দ্র করে পর্যটকের আগমন অনেকটাই কমে গেছে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও তার আশপাশের রিসোর্টগুলোতে অনেকে সপরিবারে ঘুরতে আসেন, কিন্তু এখন সেগুলোর বেশিরভাগই খালি। তাই হতাশা আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১৮ পেশার মানুষ।
সোমবার (১৭ মার্চ) কুয়াকাটার পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে নেই কোনো পর্যটকদের সমাগম। কর্মচারীরাও অলস সময় পার করছেন। তবে কিছু কিছু হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে চলছে ধোয়া মোছা, রং করাসহ বিভিন্ন সংস্কার কাজ।
এদিকে কোনো ধরনের বেচাকেনা না থাকায় দোকানগুলোতে চলছে ধোয়া মোছার কাজ। সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলে দেওয়া ক্যামেরাম্যানরাও অলস সময় পার করছেন। তবে সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
স্থানীয় দোকানি ও ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানের শুরু থেকেই পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা খারাপ হচ্ছে। আগে এখানে সারাক্ষণ ভিড় থাকত, আর এখন সময় কাটানোর জন্য অনেকেই ঘুমিয়ে ঘাকেন। পর্যটন ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গাইড, হোটেল কর্মচারী, সেলফি পয়েন্টের ফটোগ্রাফাররাও এক ধরনের হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
ঝিনুক ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন জানান, গত কয়েক মাসে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। তবে রমজানের প্রথম দিন থেকে ব্যবসা একেবারে থেমে গেছে। রমজানের আগে যেখানে প্রতিদিন ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতাম, এখন দিনে ৫০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে
এদিকে সৈকতে ফটোগ্রাফি করা মো. সজীব হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি সৈকতে ছবি তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু রমজানের শুরু থেকেই পর্যটক সংখ্যা কমে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সামনে ঈদ আসছে, কী করবো বুঝতে পারছি না।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি কেএম বাচ্চু জানান, রমজানের কারণে পর্যটকের আগমন অনেকটাই কমেছে। তবে ২৫ রমজান থেকে কিছুটা পর্যটক বৃদ্ধি পাবে এবং ঈদের পর লাখো পর্যটক কুয়াকাটায় আসবে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ মোতালেব শরীফ বলেন, প্রতি বছর রমজানে পর্যটকদের উপস্থিতি কমে যায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ বছর তুলনামূলক একটু বেশিই কম। তবে ঈদের সময় পর্যটকদের ভালো একটা উপস্থিতি আমরা আশা করছি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, যদিও বর্তমানে সৈকতে পর্যটকদের ভিড় নেই, তাদের টহল টিম এখনও দায়িত্ব পালন করছে। রমজানের শেষে পর্যটকদের আগমন বাড়বে বলেই আমাদের ধারণা।