বিডি ঢাকা ডেস্ক
বর্তমানে পর্যটন শিল্প বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ খাত হয়ে উঠেছে। এটি যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে, তেমনি দেশের সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে সহায়তা করে। বাংলাদেশেও পর্যটনের প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের অসচেতনতা ও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যটকরা অনেক সময় পর্যটনকেন্দ্রে প্লাস্টিক বোতল, পলিথিন, খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন আবর্জনা ফেলে যান। যা পরিবেশ দূষণের মূল কারণ। পর্যটকদের সুবিধার্থে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হচ্ছে হোটেল, রিসোর্ট ও বিভিন্ন অবকাঠামো। যার ফলে পাহাড় কাটা, বনভূমি ধ্বংস, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকুচিত করা এবং নদী-জলাশয় ভরাটের মতো পরিবেশবিরোধী কাজ ঘটছে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে শব্দ ও বায়ুদূষণও বাড়ছে।
পরিবেশগত বিপর্যয়ের ফলে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে পর্যটকদের আকর্ষণ কমে যাওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত। এ সমস্যার সমাধানে প্রথমেই প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি। পর্যটন কেন্দ্রে নির্দিষ্ট বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং তা কঠোরভাবে মানতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নীতিমালা বাস্তবায়ন করা জরুরি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পরিবেশ ও পর্যটন সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করাও খুবই প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায়, পর্যটনের উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে তা হতে হবে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই। প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করে যদি আমরা পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে পারি, তবেই আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে সক্ষম হব।