তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে উপজেলা সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন এখন কি আর আছে-? না আওয়ামী লীগ থেকে বিচ্যুৎ হয়ে ঝরে পড়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিভিন্ন বির্তকিত কর্মকান্ড নিয়ে তৃণমুলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের মনে হাজারো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বইছে মুখরুচোক নানা গুন্জন। আলোচিত এই দুই নেতা দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর রাজনীতির মাঠে নাই, জাতীয়-আন্তর্জাতিক দিবস, দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এমনকি মুজিববর্ষ-২০২০ উদযাপনের কোনো কর্মসুচিতেও তারা নাই-? এছাড়াও মুন্ডুমালা কলেজ চত্ত্বরের শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রয়াত নেতা শীষ মোহাম্মদের হাতে হাত রেকে ওয়াদা করেন এমপি ফারুক চৌধুরীকে রাজনীতি থেকে সরানো উদ্দেশ্যে এমন প্রচার রয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের ভাষ্য, রাজনীতিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা নিয়ে সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা বা উপজেলার নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিরোধ থাকতেই পারে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটা স্বভাবিক। কিন্ত্ত মতবিরোধ আর দলীয় প্রতিক নৌকার বিপক্ষে অবস্থান এক বিষয় নয়, যারা নৌকার বিরোধীতা করে বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকার পরাজয় ঘটায় বা পরাজয়ে মুখ্য ভুমিকা রাখে তারা আর যাই হোক আওয়ামী লীগ হতে পারেন না। যারা এসব করে তারা আওয়ামী লীগের লেবাসে থাকলেও অন্তরে মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগের চেতনা লালন করে না, তাই তারা নিজেদের আওয়ামী লীগের মানুষ বলে দাবি করতে পারেন না। তৃণমুলের অনেক নেতাকর্মীর ভাষ্য,রাব্বানী-মামুনের নৌকার ভোট চাইতে মাঠে নামা অনেক আদর্শিক নেতাকর্মীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আবার কেউ বলছে, তারা মাঠে নামায় আওয়ামী লীগের গোছানো সম্ভবনাময় ভোটের মাঠ নস্ট হচ্ছে। স্থানীয় সুত্র জানায়, তানোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত দুটি নাম গোলাম রাব্বানী ও আব্দুল্লাহ আল-মামুন। স্থানীয় সাংসদ ফারুক চৌধুরীর বদৌলতে এরা হয়েছে টাকার কুমির। সাংসদ একক ক্ষমতা বলে গোলাম রাব্বানীকে দুইবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, দুই বার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন, দুই বার মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে এবং তার পক্ষে এমপি নিজে ভোট করে তাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করেছেন। অন্যদিকে আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে দুই বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করেছেন, দিয়েছেন তানোর মহিলা কলেজে শিক্ষকের চাকরি এবং করেছেন বিভিন্ন লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দিয়েছেন নানা সুযোগ-সুবিধা। অথচ এরা করেছেন কি বিশ্বাসঘাতকতা ও বেঈমানী করে তারা এমপির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করে তা প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে এমপির কাছে ক্ষমা চেয়ে সেই যাত্রা রক্ষা পায়। বিগত ২০০৯ সালে তানোর উপজেলা নির্বাচনে গোলাম রাব্বানীকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে তার বিজয় ঠেকাতে আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে তার পরাজয় ঘটায়। একই বছর তানোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকারকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে তার বিজয় ঠেকাতে সভাপতি ইমরুল হক বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রদিপের বিজয় ঠেকায়। পরের নির্বাচনে ইমরুল হককে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হলে এবার রাব্বানী-মামুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীকে বিজয়ী করে দেয়। অন্যদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে রাব্বানী-মামুন প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট করেন। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও শরিফুল ইসলাম তবে আওয়ামী লীগ ময়নাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়।কিন্ত্ত রাব্বানী-মামুন নৌকার বিরোধীতা করে পরাজয় ঘটাতে শরিফুল ইসলামকে ওয়াকার্স পার্টি থেকে হাতুড়ি প্রতিকে প্রার্থী করে যদিও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। এদিকে মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাই ১০ জন প্রার্থী তবে দল থেকে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমিনকে নৌকা প্রতিক দেয়া হয়। কিন্ত্ত উপজেলা সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন নৌকার বিজয় ঠেকাতে জগ প্রতিকে সাইদুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করে তারা প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে ভোট করে নৌকার পরাজয় ঘটায়। অথচ ওই রাব্বানী-মামুন এবার তানোর পৌরসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নেমেছেন। তানোর পৌরসভায ১৪ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে এখানেই শেষ নয় তানোর পৌরসভায় নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান ,সেখানে এমপিবিরোধী শিবিরের নেতাকর্মীদের আধিক্য থাকলেও দেখা মেলেনি এমপি অনুসারী নেতাকর্মীদের এমনকি জেলার সভাপতি থাকলে এমপির ঘনিষ্ঠ বলে জেলার সম্পাদককে রাখা হয়নি বলেও মনে করছে তণমুল,এমনকি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তৃণমুলের ভাষ্য, রাব্বানী-মামুন এতো অপকর্মের পরেও মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে নৌকা ডুবিয়ে তানোরে এসেছে নৌকার ভোট করতে তাহলে এরা কি বিবেচনায় নিজেদের আওয়ামী লীগ বলে দাবি করে। এছাড়াও শরিফুল ইসলাম ওয়াকার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতিক নিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন করেছেন, আবার তিনি তানোর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বসে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবক দেন কি ভাবে-? এসব নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোস বিরাজ করছে।এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও গোলাম রাব্বানী ও আব্দুল্লাহ আল-মামুনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।