রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন

করোনা ঝুঁকিতে তানোর-গোদাগাড়ী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১
  • ৩৩৭ বার পঠিত

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়া এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে জেলাজুড়ে চলছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় কেউ যেন বের বা ঢুকতে না পারে সে জন্য জেলার সব উপজেলা থেকে মূল সড়ক ও কিছু লোকাল সড়কও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেলার সব মানুষকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হতেও নিষেধ রয়েছে।এতো কিছুর পরেও বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে সংক্রমণের ভয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে পালাচ্ছে শত শত মানুষ। এর বেশির ভাগ যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশঘেঁষা রাজশাহীর দুই উপজেলায়। তারা আশ্রয় নিচ্ছেন তানোর-গোদাগাড়ীতে থাকা আত্মীয় স্বজনদের বাসাবাড়িতে। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছেন দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। গত দুদিন ধরে তানোর ও গোদাগাড়ীর থানা পুলিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যেন কোন মানুষ এ দুই উপজেলায় ঢুকতে না পারে সে জন্য প্রধান প্রধান সড়কে চেক পোস্ট বসিয়েছে। এর পরেও অনেকে পাঁয়ে হেটে বিকল্প পথ ধরে জেলা ছাড়ছে তাদের যাতায়াত ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে আসা ব্যক্তিদের শরনার্থীদের সঙ্গে তুলনা করেছেন তানোরে সীমানায় চেক পোস্টে থাকা কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। তারা বলছেন, সংক্রমণের ভয়ে বেশির ভাগ মানুষ ছোট শিশু-বৃদ্ধ ও হাড়িপাতিল পোটলা নিয়ে তানোর ও গোদাগাড়ীতে থাকা আত্মীয় স্বজনদের বাসা-বাড়িতে চলে আসছেন। কিন্তু তাদের কোন অজুহাত না শুনে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সরেজমিন শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার সীমান্ত আমনুরা-ধামধুম দেখা গেছে সেখানের সড়কের ব্রিজের উপরে দিয়ে বাশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। তানোরের মুণ্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ চেক পোস্ট বসিয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ব্যক্তি পোটলা বেঁধে শিবগঞ্জ-কানসাট থেকে তানোরের বিভিন্ন গ্রামে আসার জন্য ভিড় করছেন চেক পোস্টে। কিন্তু কোন অজুহাত না শুনে পুলিশ তাদের ঢুকতে দেয়নি। তবে তারা ফিরেও যায়নি। তারা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চেক পোস্ট থেকে ফিরে মাঠের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে তানোর ঢুকে পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।শিবগঞ্জ থেকে বৃহস্পতিবার পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তানোরের বাধাইড় ইউনিয়নের একটি গ্রামে কয়েকজন এসেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, শিবগঞ্জ-কানসাটে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক মানুষ বাড়ি মারা যাচ্ছে। তাই তারা সেখানে আর থাকতে চান না। সে কারণে এখানে থাকা আত্মীয়বাড়িতে পালিয়ে এসেছেন।এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়ন, মুণ্ডুমালা পৌর এলাকা ও গোদাগাড়ীর বিভিন্ন গ্রামে শত শত মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ তথ্য দিয়েছেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।মুণ্ডুমালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী চিকিৎসক ডা. দুরুল হোদা বলেন, প্রতিদিন যে সাধারণ রোগী আসে গত কয়েক দিনে তার চেয়ে তিন-চার গুণ রোগি তার এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। যার বেশির ভাগ ছিল করোনা উপসর্গ। জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদি নিয়ে। মুণ্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিজান। তিনি তিন দিন ধরে তানোরের শেষ সীমানা আমনুরা ধামধুম নামক স্থানের চেক পোস্ট বসিয়েছেন।কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, এ তিন দিনে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তানোরে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আসার জন্য শরনার্থীর মতো লাইন ধরে আসতে চেয়েছে। কিন্তু পুলিশের বাধায় তারা ঢুকতে পারেনি। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যক্তিরা অনেকটা সংক্রমণের ভয়ে পালিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন।তবে তারা ফিরে গেছেন কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মূল সড়ক দিয়ে তারা আসতে পারেনি। তবে অন্য কোন বিকল্প উপায়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকেছে কিনা সেটা বলতে পারবো না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com