পবিত্র মহররম উপলক্ষে রাজধানীর হোসেনি দালানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। তবে অন্যান্যবারের মতো এবার হোসেনি দালানের বাইরে জাকজমকপূর্ণভাবে বের হয়নি তাজিয়া মিছিল।
এবার পবিত্র মহররম উপলক্ষে কীভাবে হবে সে বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনা মেনেই সকাল ৮টার পর থেকে রাজধানীর হোসেনি দালান ও এর আশপাশের এলাকায় ভিড় জমাতে শুরু করেন শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা। তাদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসবে সুন্নী মুসলমানদের পাশাপাশি যোগ দেন ভিন্ন ধর্মালম্বীরাও।
যারা আসেন তাদের বেশিরভাগেরই পরনে শোকের রঙ কালো পোশাক রয়েছে। পাশাপাশি তাদের হাতে আছে কালো, লাল রঙের আলাম বা নিশান। তাজিয়া মিছিলে যোগ দিয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা বুক চাপড়িয়ে ‘হায় হোসেন’, ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলছেন। তাদের মাতমে চারপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। অনেকেই ইমাম হোসাইন (রা.)-এর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। সেই সঙ্গে নিজ পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত করছেন।
১০ মহররম, পবিত্র আশুরা কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল দিন। দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয়। বাংলাদেশেও প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচিতে পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।
হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাঁদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়।
মহররম উপলক্ষে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো আজ বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।