নিউজ ডেস্ক : ওরা গভীর রাতে নির্জন মহাসড়কের দুই পাশে ঝোঁপের ভিতর ওঁত পেতে থাকে। যাত্রীবাহী বাস যেতে দেখলেই লোহা জাতীয় কিছু জিনিস দিয়ে ঢিল ছোঁড়ে বাসটি লক্ষ্য করে। বাসের জানালা বা উল্ডশিল্ডের কাঁচ ভেঙ্গে গেলে বাসটি থেমে যায়। তখন ওরা মহাসড়কের দুই পাশ থেকে বের হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে। এরপর বাসের চালকের আসনে ওদের একজন বসে পড়ে।বুধবার ( ৩০ জুন) মালিবাগে সিআইডি’র কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশেষ পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন, বিশেষ পুলিশ সুপার মাকসুদুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।
বাসযাত্রীদের জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে ওরা মাঝ রাস্তায় নেমে যায়। এভাবেই একটি আন্ত:জেলা বাস ডাকাত দলের চক্র গত ২ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে গভীর রাতে বাস ডাকাতি করছে। সিআইডি তদন্ত করে এই ডাকাত চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মনসুর মিয়া ওরফে ছোট মনসুর ওরফে আকাশ (৪৬), ইউনুছ আলী (৩৬), কাজল মিয়া (৩০), আল আমিন (৩২) ও মিজানুর রহমান ওরফে শাহরুখ খান (৩১)। সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, সম্প্রতি ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লাসহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত হয়ে আসছে। গত ১০ মার্চ রাত ২ টায় টাঙ্গাইল সদর থানাধীন ভাতকুড়া করটিয়া এলাকার ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন সশস্ত্র ডাকাত কর্তৃক রংপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি সংগঠিত করে। ঘটনাটি তদন্ত করে মঙ্গলবার রাতে ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র এবং লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর আরো বলেন, আসামিরা ২০০৩ সাল হতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী ডাকাতি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ডাকাতি, হত্যাসহ একাধিক মামলা আছে। এদের মধ্যে ডাকাতদলের প্রধান নেতা মনসুর মিয়া ২০১২ সালে মালদ্বীপ যায় শ্রমিক হিসাবে। ২০১৯ সালে দেশে ফিরে এসে সে আবারও বাস ডাকাতিতে লিপ্ত হয়।