নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নদী সম্পদ ও নদী-সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার বৃহত্তর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জেআরসির আনুষ্ঠানিক মন্ত্রী পর্যায়ের এই ৩৮তম বৈঠকটি বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে সুষমা স্বরাজ ভবনে শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে। দীর্ঘ ১২ বছর পর এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটিই বলে দেয়, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্য বৈঠকটির অনেক গুরুত্ববহ ভূমিকা রয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) একইস্থানে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়।
জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও ভারতের জলশক্তি (পানিসম্পদ) মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং সাখাওয়াত নিজ নিজ পক্ষে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে দুই দেশের অভিন্ন নদী বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও বন্যা সংক্রান্ত তথ্য ও তথ্যের আদান-প্রদান, নদীর তীর রক্ষার কাজ, সাধারণ অববাহিকা ব্যবস্থাপনা এবং ভারতীয় নদী আন্তঃসংযোগ প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির খসড়া কাঠামো তৈরির জন্য তথ্য ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য আরও কিছু অভিন্ন নদী চালু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
বৈঠকে কুশিয়ারা নদীর অন্তর্বর্তীকালীন পানি বণ্টন বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের খসড়া অনুমোদিত হয়েছে।
এদিকে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ত্রিপুরার সাবরুম এলাকার সুপেয় পানি প্রকল্পের জন্য পানি দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এই চুক্তি অনুসারে ফেনী নদীর পানি গ্রহণের স্থানের নকশা এবং অবস্থান চূড়ান্তের বিষয়টি বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই সাধুবাদ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অপ্রত্যাশিত বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশতে সহায়তা করতে ভারত বন্যার তথ্য আদান-প্রদানের সময়সীমা ১৫ অক্টোবরের পরে বাড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি নদীর পানি বণ্টন চুক্তির কাঠামো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। বৈঠকে আরও ৮টি নদীর পানি বণ্টন চুক্তির জন্য তথ্য আদান-প্রদানের জন্য উভয় দেশ সম্মত হয়েছে। জেআরসির কারিগরি পর্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। অন্তর্ভুক্ত করে চলমান সহযোগিতার এই ক্ষেত্রকে আরও প্রশস্ত করতে সম্মত হয়েছে। বিষয়টি জেআরসি-এর কারিগরি স্তরের কমিটিতে আরও আলোচনা করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদীর বিষয়ে উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন গঠিত হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..