বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন

জ্বর, সর্দি-কাশির ভাইরাস করোনা ভাইরাসকে আটকে দেয়: গবেষণা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ৭০৭ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ : করোনা সংক্রমণে টালমাটাল পুরো বিশ্ব। এ থেকে রেহায় পাওয়ার উপায় খুঁজতে নানাভাবে গবেষণা চলছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে যতদিন সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা খুসখুস, গলাব্যথা থাকে তত দিন করোনা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। ব্রিটেনের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, একই সময়ে যদি দু’টি ভাইরাস মানব দেহকোষে ঢোকে তাহলে প্রাথমিক ভাবে সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে এক রকম জব্দ করে রাখে রাইনোভাইরাস। শরীরে ঢুকে খুব দ্রুত নিজেকে সক্রিয় করার কাজ শুরু করে দেয় রাইনোভাইরাস। আর তখন সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে এটি সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগটাই দেয় না। ফলে, মানব দেহকোষে ঢুকেও কিছু দিনের জন্য কার্যত নিষ্ক্রিয়ই হয়ে থাকতে বাধ্য হয় সার্স-কভ-২। সেই সময় রাইনোভাইরাসই শরীরে রাজত্ব চালায়।

এর আগে বিভিন্ন সংক্রমণের ঘটনায় দেখা গিয়েছে, এমন অনেক ভাইরাস আছে, যেগুলি একই সময়ে মানবশরীরে ঢুকে একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে থাকে। সেই সব ভাইরাসই মানব দেহকোষে একই সঙ্গে বংশবৃদ্ধি করে, নিজেদের মতো করে আলাদা আলাদা কৌশলে। এসব ভাইরাস একে অপরের বংশবৃদ্ধিতে বাধা দেয় না। যেমন -‘অ্যাডিনোভাইরাস’ ভাইরাস। এটি মানব দেহকোষে অন্যান্য ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান করে।

কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস’ ও ‘রাইনোভাইরাস’ মানব দেহকোষে ঢুকলে অন্য কোনও ভাইরাসকে বংশবৃদ্ধি করতে দেয় না। শরীরে রাইনোভাইরাসের ভূমিকা বুঝতে গবেষকরা একটি পরীক্ষা চালিয়েছেন। গবেষণার জন্য কৃত্রিম ভাবে মানুষের একটি শ্বাসনালী তৈরি করা হয়। পরে তার মধ্যে একই সময়ে রাইনোভাইরাস ও সার্স-কভ-২ ভাইরাস ঢোকানো হয়। গবেষণার জন্য দুটি ভাইরাসই যাতে মানব দেহকোষে অবাধে বংশবৃদ্ধি করতে পারে তার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

গবেষকরা দেখেন, মানব দেহকোষে দু’টি ভাইরাস ঢোকানোর পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় শুধুই বংশবৃদ্ধি ঘটায় রাইনোভাইরাস। স‌েই সময় সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে রাইনোভাইরাস বংশবৃদ্ধি ঘটাতে দেয়নি। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর সার্স-কভ-২ ভাইরাস বংশবৃদ্ধি করতে শুরু করে। কিন্তু তার পরেই সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে নিস্ত্রিয় করে শরীর থেকে বের করে রাইনোভাইরাস।

মূল গবেষক গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পাবলো মুর্সিয়া বলেছেন, রাইনোভাইরাস সংক্রমণের পর মানব দেহকোষের যে প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তা সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে বংশবৃদ্ধি ঘটাতে দেয় না। ফলে সেই সময় করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাও কমে যায়।

তবে গবেষকরা অবশ্য এটাও জানিয়েছেন, এই লড়াইটা অবশ্য সাময়িক। কারণ রাইনোভাইরাস মানবশরীরে খুব বেশি দিন সক্রিয় থাকতে পারে না। তাই শরীরে সামান্য জ্বর, সর্দি,কাশি, গলা খুসখুস, গলাব্যথা বেশি দিন স্থায়ীও হয় না। তারপর শরীরে সার্স-কভ-২ ভাইরাসের আক্রমণ জোরালো হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, এই বিষয়টিকে সার্স-কভ-২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে কাজে লাগানো যেতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com