শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এখনো ভক্তদের ‘ক্রাশ’ শাবনূর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৮৮৭ বার পঠিত

বিনোদন নিউজ : ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। বড় পর্দায় অভিষেকের পর প্রায় দুই দশক ঢালিউডে রাজত্ব করেছেন। অভিনয় করেছেন প্রায় আড়াই শতাধিক চলচ্চিত্রে। বিখ্যাত পরিচালক এহতেশামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে পা রাখেন এ অভিনেত্রী। ১৯৯৩ সালে নায়ক সাব্বিরের বিপরীতে ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। অভিষেক চলচ্চিত্রে সাড়া ফেলতে পারেননি এই অভিনেত্রী। ১৯৯৪ সালে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন ‘তুমি আমার’ সিনেমায়। এই সিনেমার মাধ্যমে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন শাবনূর। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বাংলা চলচ্চিত্রে জন্ম হয় এক কালজয়ী জুটির। কিন্তু সালমান শাহের অকাল প্রয়াণে এই জুটি খুব বেশি সিনেমায় অভিনয় করতে পারেনি। তারপরও মাত্র ১৪টি সিনেমায় জুটি বেঁধে সালমান-শাবনূর, রাজ্জাক-কবরী জুটির পর এখনো দর্শকের কাছে সেরা জুটি হয়ে আছে। সালমান শাহর পর রিয়াজ, ফেরদৌস, মান্না, অমিত হাসান, শাকিব খানসহ অনেক নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনূর। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতায় জিতে নেন জাতীয় চলচিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদকে বিয়ে করেন শাবনূর। তারপর চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। সিনেমা থেকে দীর্ঘ সময় দূরে থাকলেও এখনো দর্শক হৃদয়ে রয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) শাবনূরের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে প্রিয় নায়িকাকে নিয়ে তার ভক্তরা কথা বলেছেন ।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মেয়ে মিনা। যার শিক্ষাজীবনের পুরোটাই কেটেছে শাবনূর অভিনীত সিনেমা দেখে। জলি জানান, বান্ধবীদের সঙ্গে সিনেমা দেখার অন্যরকম আনন্দ ছিল। অনেক দিন ধরে স্বামীর সঙ্গে প্রবাস জীবন পার করছেন জলি। সুযোগ পেলেই ইউটিউবে শাবনূর অভিনীত সিনেমা ও গানগুলো বারবার দেখেন তিনি।

সময়টা নব্বই দশকের। বাংলা সিনেমার সেই স্বর্ণযুগে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার ব্যাপক চল ছিল। স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে শাবনূরের সিনেমা দেখতে চলে যেতেন শাবনূর ভক্ত বাবুল মিয়া। এমনকি টেলিভিশনেও বিজ্ঞাপন বিরতির যন্ত্রণা সয়ে দেখতেন প্রিয় নায়িকার সিনেমা। এখন আর হলে কিংবা টেলিভিশনে সিনেমা দেখার তেমন সময় মেলে না তার। কিন্তু এখনো তার মুঠোফোনে রয়েছে শাবনূরের ছবি, গান, সিনেমার ক্লিপ ইত্যাদি।

বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের কাছেও সমানভাবে সমাদৃত শাবনূর। এই যুগেও তার অসংখ্য তরুণ ভক্ত রয়েছে। আনন্দ মোহন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম শাবনূরের ভীষণ ভক্ত। হলে গিয়ে সিনেমা দেখার সুযোগ না হলেও ইউটিউবে শাবনূর অভিনীত প্রায় সব সিনেমা দেখেছেন তিনি। এতসব নায়িকাদের ভিড়ে শাবনূরই তার ‘ক্রাশ’ বলে জানান আবিদ। প্রিয় নায়িকাকে নিয়ে আবিদ বলেন— এখন তো বাংলাদেশি সিনেমা আগের মতো কেউ দেখে না। আর এই যুগের নতুন নায়িকাদের দেখলে মনে হয় তারা অভিনয় করছে। কিন্তু শাবনূরের ক্ষেত্রে তা নয়। যেকোনো চরিত্রে অনায়াসে মিশে যেতে পারেন গুণী এই অভিনেত্রী। যা দেখে বাস্তব মনে হয়। ঢাকাই চলচিত্রে তার স্থান এখনো অনেক উপরে। তাকে দেখে অনেকেরই অভিনয় শেখা উচিত।স্কুলপড়ুয়া শিশুদের কাছেও জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। ত্রিশালের সোনার বাংলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসবিহা শাবনূর ভক্ত। প্রায়ই বাবা-মায়ের সঙ্গে শাবনূরের সিনেমা দেখেন তিনি। বড় হয়ে কী হতে চাও? জানতে চাইলে মিষ্টি হেসে তাসবিহা বলেন, ‘আমি শাবনূর হবো।’ শুধু ভক্ত নয়, বাংলাদেশি অনেক তারকার কাছেও তারকা শাবনূর। বর্তমান প্রজন্মের অনেক অভিনেত্রী অনুসরণ করেন শাবনূরকে। আর তার সমসাময়িক অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এখনো তার অভিনয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।শাবনূর অভিনীত সিনেমার সংখ্যা প্রায় আড়াই শতাধিক। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো—‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘তোমাকে চাই’, ‘তুমি আমার’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিড়ে’, ‘কাজের মেয়ে’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘খেয়া ঘাটের মাঝি’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘আমার স্বপ্ন তুমি’, ‘ফুল নিব না অশ্রু নিব’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘চার সতীনের ঘর’, ‘প্রেমের অহংকার’, ‘ভুলোনা আমায়’, ‘দুই বন্ধু এক স্বামী’, ‘বলব কথা বাসর ঘরে’ (নেগেটিভ চরিত্র) প্রভৃতি।

শাবনূরের জন্ম ১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোরে। তার পারিবারিক নাম কাজী শারমীন নাহিদ নূপুর। বর্তমানে ছেলে আইজানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাস করছেন তিনি। সিনেমা থেকে দূরে থাকলেও ভক্তদের হৃদয়ে রানির আসনটা এখনো দখল করে আছেন শাবনূর।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com