শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪০ অপরাহ্ন

প্রথম দিনেই টিকা নিলেন ৩১ হাজার, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ২১ জনের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৩৫৫ বার পঠিত

দেশে প্রথম দিনেই করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন মোট ৩১ হাজার ১৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৩ হাজার ৮৫৭ জন ও নারী ৭ হাজার ৩০৩ জন। টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে ঢাকা বিভাগ। এর মধ্যে জেলাওয়ারী সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। আর সবচেয়ে কম দেয়া হয়েছে বরগুনায়। ঢাকা মহানগরে টিকা নিয়েছেন মোট পাঁচ হাজার ৭১ জন। আর বরগুনায় নিয়েছেন ৭৮ জন।

এই টিকা দেশে আসার পর যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নানা অপপ্রচার চলছিল, তার কোনো নমুনাই দেখা যায়নি। ৩১ হাজার মানুষের মধ্যে ২১ জনের সামান্য জ্বর, টিকাদান স্থানে হালকা ব্যাথা ও লাল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাকিরা পুরোপুরি স্বাভাবিক আছেন। শতকরা হিসাবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার ০.০৬৭ শতাংশ। যা যে কোনো টিকার ক্ষেত্রেই এক স্বাভাবিক চিত্র।স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইএমআইএস সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘তেমন কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি কারও। কারও কারও ক্ষেত্রে টিকা দেয়ার স্থান লাল হয়ে গেছে। সামান্য জ্বর এসেছে কারও। একটু ব্যাথা করছে-এমন তথ্য এসেছে।’সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকা দেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণে সবাইকে ৩০ মিনিট হাসপাতালে রাখা হয়। আর তার ভিত্তিতেই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সব আলোচনা-সমালোচনা, দ্বিধা-ভয় কাটিয়ে একযোগে সারাদেশে ভ্যাকসিন নিলেন মন্ত্রী, বিচারপতি, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, মেয়র, সচিব ও সরকারি পর্যায়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভয় কাটিয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগের দিনটি হয়ে ওঠে উৎসবের। এদিন ভ্যাকসিন গ্রহণের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে দেশের ১০০৫ কেন্দ্রে।

বিভাগভিত্তিক টিকা গ্রহণ- ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় নয় হাজার ৩১৪, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় ছয় হাজার ৪৩৪, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় তিন হাজার ৭৫৭, রংপুর বিভাগের আট জেলায় দুই হাজার ৯১২, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় তিন হাজার ২৩৩, সিলেট বিভাগের চার জেলায় দুই হাজার ৩৯৬, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় এক হাজার ৪১২ ও ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় এক হাজার ৬৯৩ জন টিকা নিয়েছেন।

সকালে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল থেকে দেশব্যাপী করোনার টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত নিবন্ধিত ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হয়। একযোগে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির শুরুর দিনেই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা ভ্যাকসিন নেন।

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাকসিন নেন বিচারপতি জিনাত আরা হক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য আব্দুস সামাদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরীও ভ্যাকসিন নেন এদিন।

এদিন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক ও তার স্ত্রী তারাবো পৌরসভার মেয়র হাছিনা গাজী। আর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী। নেত্রকোনায় ভ্যাকসিন নেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে ভ্যাকসিন নেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। টঙ্গীতে ভ্যাকসিন নেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

ঠাঁকুরগাওয়ে ভ্যাকসিন নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন ভ্যাকসিন নেন।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

দিনাজপুরে ভ্যাকসিন নেন হুইপ ইকবালুর রহিম, কুষ্টিয়ায় ভ্যাকসিন নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।

রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভ্যাকসিন নেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ভ্যাকসিন। রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, রংপুরের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার কাজী রশিদ উন নবী, শেবাচিম পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেনও ভ্যাকসিন নেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় এবং বিভিন্ন জায়গায় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিক নিজ নিজ এলাকায় ভ্যাকসিন নেন।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে ‍উৎপাদিত টিকা সরকারের কাছে ৭০ লাখ আছে। এর মধ্যে ২০ লাখ টিকা ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে। বাকি ৫০ লাখ টিকা সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কিনেছে। এই টিকা ৩৫ লাখ মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। তবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার মানুষ।

এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ওই দিন ২১ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com