শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

মামুনুল হককে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হলো

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৭১ বার পঠিত

নিজস্ব সংবাদদাতা : হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। রোববার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম যৌথ অভিযানে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্য মামলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকেই মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রেখেছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মামুনুল হক ওই মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ ও তেজগাঁও বিভাগের শতাধিক পুলিশ প্রথমে ওই মাদ্রাসাটা ঘিরে ফেলে। এ সময় মাদ্রাসার ভেতরে দেড় শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অবস্থান করছিলেন। পুলিশের অভিযানে প্রথমে তারা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত পুলিশ দেখে হাল ছেড়ে দেন। পরে মামুনুল হককে দোতালার ওই কক্ষ থেকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। প্রথমে তাকে মিরপুর সড়কে পুলিশের তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। মোদির বিরোধিতায় প্রথমে ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভে সহিংসতা হয়, তার জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাণঘাতী সংঘাত হয়। যার জেরে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত, ওই হরতালকে ঘিরে চরম নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয় সারাদেশে।

এরপর গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ‘ঘেরাও’ করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মামুনুল এক নারীসহ আটক হয়েছেন। যদিও ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক। ওইদিন সন্ধ্যায় রিসোর্ট থেকে তাকে ছাড়িয়ে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান হেফাজত নেতাকর্মীরা।

হেফাজতের নেতাকর্মীরা রিসোর্ট, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়, বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। ওইদিন পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাঙচুরের অভিযোগে মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। এছাড়া মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়।

এ মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে।

এছাড়া যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগআরেকটি মামলাটি করা হয়। এ মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও ২৫০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলায় হেফাজতে ইসলাম, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com