নিজস্ব সংবাদদাতা :করোনার সংক্রমণ রোধে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ব্যারিকেডগুলোর সামনে দাঁড়াচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। একজন গাড়ি থামাচ্ছেন, বাকিরা ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করছেন। কারণ যৌক্তিক হলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সন্দেহ হলেই বাসায় পাঠানো হচ্ছে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে বসানো ব্যারিকেডগুলোতে এ দৃশ্য ধরা পড়ে। তবে, একই সঙ্গে সরকারে জারি করা আগের বিধিনিষেধের সময় সড়কে যে পরিমাণ যানবাহন বা মানুষ দেখা গিয়েছিল, আজ সেই চিত্র নেই বললেই চলে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বংশালে পুলিশ সদস্যরা ‘ঢাকা ওয়াসা’ স্টিকার লাগানো একটি মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মোটরসাইকেল আরোহী জরুরি প্রয়োজনে তার বোনের বাসা বাবুবাজার থেকে উত্তরখান যাওয়ার কথা পুলিশকে জানান। তবে তার যাওয়ার ‘কারণ’ পুলিশের জরুরি মনে না হওয়ায় তাকে উল্টোপথে ফেরত পাঠানো হয়।
বংশাল থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, সকাল ৬টা থেকে আমরা সড়কে অবস্থান নিয়েছি। ৮টার পরপরই মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। অধিকাংশই হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলছেন। কেউ কেউ অনলাইনে পণ্য ডেলিভারির কথা বলে এলাকায় প্রবেশ করেছেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া কাউকেই চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনুমপ গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সকাল থেকেই আমাদের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। রাস্তায় যারা বের হয়েছে তাদের মুভমেন্ট পাস আছে কিনা চেক করা হচ্ছে। যারা মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হচ্ছেন না তাদেরকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন হওয়ায় কেউ কেউ মুভমেন্ট পাস না নিয়েই বের হয়েছেন। জরুরি কাজে যেমন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যারা বের হয়েছেন তাদেরকে যেতে দেয়া হচ্ছে, তবে প্রথমদিন বলে এতোটুকু ছাড় দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এ ছাড় দেয়া হবে না।
রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এস এম শামীম বলেন, জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে পুলিশ রাজপথে কাজ শুরু করেছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্ট এলেই তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে এবং মুভমেন্ট পাস আছে কিনা চেক করা হচ্ছে। মুভমেন্ট পাস না থাকলে অনেকেকই আটকে দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, সরকার যে সব নির্দেশনা দিয়েছে তার আলোকেই পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও করোনাকালে দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের একটি সুলিখিত ও আন্তর্জাতিক মানের এসওপি (স্ট্যান্ডিং অপারেটিং প্রসিডিওর) রয়েছে। সেখানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, পুলিশের দায়িত্ব-কর্তব্য ও তা পালনের উপায়। সেই এসওপি অনুসরণ করে সরকারি নির্দেশনার আলোকে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ।
এর আগে ৫ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিলো। পরে তা আরো দুইদিন বাড়ানো হয়েছিলো। তা অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়। তবে এ দফায় আজ থেকে জারি করা বিধিনিষেধে ‘অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার এবং টিকা কার্ড নিয়ে টিকার জন্য যাওয়া) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।