বিডি ঢাকা ডেস্ক
বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে এক চরম সংকটের মুখে রয়েছে। বিশেষ করে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুরগির দাম বৃদ্ধির পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে, তা দেশের পোল্ট্রি খামারিদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সাম্প্রতিক সময়ে মুরগির বাজারদর বেড়েছে, তবে এর পেছনে রয়েছে করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট ও প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির একটি জটিল সম্পর্ক। ডিম-মুরগির দাম বাড়লেই সকল মহলে হইচই পড়ে যায়, বাজারে অভিযান পরিচালিত হয়। অথচ ফিড ও বাচ্চার দাম বাড়লেও সরকার নীরব। এটা কি দ্বৈত নীতি নয়? বড় কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে ফিড মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যদি ডিম-মুরগির দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলে, তবে ফিড ও বাচ্চার বাজারেও একইভাবে অভিযান চালিয়ে উৎপাদন খরচ কমানো উচিত। নইলে খামারিরা টিকে থাকবে কীভাবে? বাজার অস্থিরতা কাটবে না।
শনিবার বাংলাদেশ পোল্টি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলদারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রান্তিক খামারিরা বর্তমানে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ করছেন ১৭০-১৮০ টাকা, যেখানে করপোরেট কোম্পানির উৎপাদন খরচ ১৩০-১৩৫ টাকা। এর ফলে প্রতি কেজিতে প্রায় ৩০-৪০ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে ক্ষুদ্র খামারিদের। উৎপাদন খরচের এই বৈষম্যের কারণে তারা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছেন না এবং প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ৪৫-৫৫ টাকা, তখন ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ছিল ১৫৫ টাকা, আর বাজারদর ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। বর্তমানে মুরগির বাচ্চার দাম বেড়ে ৭০-৮০ টাকা হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ ১৭০-১৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বাজারে মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়, যা অনেকের কাছে ন্যায্য মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রান্তিক খামারিরা লাভবান হচ্ছেন না।
মুরগির বাচ্চার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পোল্ট্রি শিল্পে সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ। ঈদের আগে হঠাৎ করেই বাচ্চার দাম ৪৫-৫৫ টাকা থেকে ৭০-৮০ টাকায় বেড়ে গেছে। এর ফলে খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে, অথচ করপোরেট কোম্পানিগুলো তুলনামূলকভাবে কম দামে উৎপাদন করতে পারছে। কোম্পানিগুলো নিজেদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য বাচ্চার দাম বাড়িয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে, যা ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।