নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর হচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরের বাইরে সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। আর এই নির্দেশনা না মানলেই শাস্তি হিসেবে বেতের বাড়ি দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে সরকার। সোমবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে বিষয়টি আলোচনায় আসে বলে জানা গেছে।
সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে থাকা এক কর্মকর্তা মাস্ক না পরলে বেতের বাড়ি দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। তবে প্রচলিত আইনে বেতের বাড়ি দেওয়ার সুযোগ নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে আরেক আলোচক প্রয়োজনে আইনি সুযোগ তৈরির প্রস্তাব করেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেতের বাড়ির বিষয়টি কীভাবে আইনি পরিকাঠামোতে আনা হবে, তা নিয়ে ভাবছে সরকার। জরুরি জনস্বার্থ বিষয়ক প্রয়োজনে সরকার বেতের বাড়ি দেওয়ার প্রভিশন আইনে যুক্ত করতে পারে।
সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ আইন বা অন্য কোনো আইনে তা বৈধতা দেওয়া হতে পারে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, বৈঠক শেষে সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার না করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জরুরি কাজে ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সরকার বারবার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেকেই এ নির্দেশনা অমান্য করছেন। এক্ষেত্রে বাইরে চলাফেরার সময় মাস্ক ব্যবহার না করলে সরকার কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে প্রত্যেককে দুটো মাস্ক ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে সরকার।
এর আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সোমবার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এটা আমাদের দেশেও ছড়িয়ে যেতে পারে। সেজন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, সার্বিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে অবস্থাটা আছে সেটি আরও এক সপ্তাহ কন্টিনিউ করা। না হলে এটা আরও ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করতে পারে। সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেজন্য বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে আগামীকাল প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রথমবার ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। এটি বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। যদিও শপিং মল খোলাসহ বেশকিছু বিষয়ে বিধিনিষেধের শর্ত শিথিল করেছে সরকার। এখন বাড়তি এই সময়ে বিধিনিষেধ কঠোর হবে নাকি শিথিল থাকবে তা জানা যাবে প্রজ্ঞাপন জারির পর।