বিডি ঢাকা ডেস্ক
কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ইটভাঁটি মালিকদের চরম বেপরোয়া হয়ে উঠার অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের বিরুদ্ধেই তাদের ফুঁসে উঠার একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
গত ২ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলা এবং ৪ ডিসেম্বর কুমারখালী উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে পরিচালিত অবৈধ ইটভাঁটি উচ্ছেদে স্বয়ং ভ্রাম্যমাণ আদালত হামলার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার প্রধান কেমিস্ট ও সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বাশার বলেন, ‘রীতিমতো সরকারি কাজে বাধাদানই নয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন, ‘এই অভিযান পরিবেশ অধিদপ্তরের চলমান রুটিন ওয়ার্ক। ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন আইন এবং পরিবেশ সুরক্ষা আইন না মেনে ভাঁটি স্থাপন করলেই সেখানে এই অভিযান চলবে। এই অভিযানের মধ্যদিয়ে সবাই যেন সচেতন হয়ে উঠতে পারে সেটা আমাদের কাম্য’। এদিকে একইভাবে গত ৪ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার ১১নং চরসাদীপুর ইউনিয়নের ৩২টি অবৈধ ইটভাঁটি যার মধ্যে ১৯টিই হলো বিপদজনক ড্রাম চিমনির ভাঁটি। এসব ভাঁটি উচ্ছেদে পাবনা সদর, কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী এই তিন উপজেলার সহাকরী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং আনসার, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও আর্মিসহ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে অভিযানে গিয়ে চরম বাধার মুখে পড়ে এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে জানা যায়।
লালপুরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ইটভাঁটি-
নিজস্ব সংবাদদাতা, লালপুর, নাটোর থেকে জানান, নিয়ম ও আইন না মেনে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া লালপুরে বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্র-তত্রভাবে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাঁটি। ফলে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর এসব ইটভাঁটির কারণে কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ ও উর্বরতা। ফলে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে ফসলি জমি। জানা যায়, উপজেলার পদ্মা নদীর চর ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা ভবন ও লালপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নিকটসহ সড়কের পাশে এবং লোকালয়ে প্রায় ৩৩টি অবৈধ ইটভাঁটি আছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমাড় হোড় বলেন, সরকারিভাবে ফসলি জমিতে ইটভাঁটি স্থাপন করা নিষেধ আছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসান বলেন, অবৈধ ইটভাঁটিগুলোতে অভিযান করা হবে।
বাকেরগঞ্জে বাড়ি ঘেঁষে ইটভাঁটিনিজস্ব সংবাদদাতা বাকেরগঞ্জ বরিশাল থেকে জানান, বাকেরগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই দিন দিন বাড়ছে ইটভাঁটি। অধিকাংশ ইটভাঁটি গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি ও আবাসিক এলাকার মধ্যে। সেসব ভাঁটিতে কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল। আর এসব ইট
ভাঁটিতে ইট প্রস্তুতির জন্য বেশিরভাগ মাটি সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন নদীর চরের মাটি কেটে। অবৈধ ইটভাঁটির সঠিক পরিমাণ তথ্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছেও। মাঝেমধ্যে এসব ভাঁটি বন্ধে অভিযান চালানো হয়, জরিমানাও করা হয়। তবে এর পরও থামে না ইট ভাঁটির কার্যক্রম।
উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নসহ গারুড়িয়া, দুধল, কবাই, নলুয়া, চরামদ্দি, চরাদি ফরিদপুর, দাড়িয়াল ইউনিয়নে অর্ধশত ড্রাম চিমনি অবৈধভাবে ইট ভাঁটি গড়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বনাঞ্চল উজাড় করে ট্রলি ও ট্রলারযোগে কাঠ এনে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে বাকেরগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধ পাঁচটি ইটভাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।