নন্দীগ্রাম (বগুড়া) সংবাদদাতা : বগুড়ার নন্দীগ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে’র ফাঁদে ফেলে অভিনব কায়দায় আব্দুল মোত্তালেব (৩৬) নামের এক যুবকের নিকট থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা লুটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় প্রতারক চক্রের মূল হোতা’সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।গ্রেফতাররা হলেন, উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ভদ্রদিঘী গ্রামের সৌদি প্রবাসী সুজন প্রামানিকের স্ত্রী রিনা বেগম (৩৭) কহুলী তালপুকুর গ্রামের মিলন হোসেনের ছেলে লিটন হোসেন(২২) কহুলী গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে গোলাম রাব্বি (২০)।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে নন্দীগ্রাম থানা থেকে তাদের বগুড়া কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ভদ্রদিঘী গ্রামের সৌদী প্রবাসী সুজন প্রমানিকের স্ত্রী রিনা বেগম ‘‘শিপলু সাথী’’ নামে একটি ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে। সেই আইডির মাধ্যমে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার কালাকান্দর গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে আব্দুল মোতালেবের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে। আব্দুল মোত্তালেব সিলেটে একটি এনজিওতে চাকুরি করে। ফেসবুকে চ্যাটিং ও ফোনে তাদের মধ্য কথা চলতো। এর এক পর্যায়ে রিনা বেগম আব্দুল মোত্তালেব কে তার সাথে দেখা করতে বলে। তখন আব্দুল মোত্তালেব গত বুধবার (১৬ জুন) সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় ভদ্রদিঘী গ্রামে আসে।
সে সময় রিনা বেগম ও তার সহযোগিরা আব্দুল মোত্তালেবের হাত ধরাধরি করে আপ্যায়ণের কথা বলে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর আব্দুল মোত্তালেব পরিস্থিতি দেখে বারবার চলে যেতে চাইলে তারা তাকে ঘরে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে রিনা বেগম তাকে বলে যতো সহজে এসেছিস ততো সহজে যেতে পারবি না বলে হুমকি দিতে থাকে। এবং তাকে মারপিট করে তার পকেট থেকে নগদ ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর রিনা বেগম ও তার সহযোগিরা আব্দুল মোত্তালেবের পরিহিত শার্ট-প্যান্ট খুলে উলঙ্গ করে ছবি ধারণ করে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে। সে বেকায়দায় পড়ে তার বন্ধু মুনিরুজ্জামানের মাধ্যমে রিনা বেগমের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে। বাঁকি ৮৫ হাজার টাকা দাবি করে তার মোবাইলের একটি মেমোরি কার্ড ও মানিব্যাগে রাখা একটি এটিএম কার্ড বের করে নেয়। পরে ৮৫ হাজার টাকা আদায়ের জন্য ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। পরে আব্দুল মোত্তালেব সেখান থেকে বের হয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে।বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকালে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানালে থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ ও এসআই বিকাশ ভদ্রদিঘী এলাকায় অভিযান চালিয়ে রিনা বেগম ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার করে।এ ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ ও ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী আব্দুল মোত্তালেব।