বিডি ঢাকা ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমতাজ বেগম। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ নানা আয়োজনে উদযাপন করে আসছেন।
এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিজ উদ্যোগে রবিবার করেছিলেন নানান আয়োজন।
সকাল থেকে রহনপুর পৌর এলাকার পুনর্ভবা নদীঘেঁষা বাবুরঘোন মহল্লায় ওই শিক্ষিকার বাড়িতে চলে এই আয়োজন। তার এ আয়োজনে বরাবরই ছাত্র-ছাত্রী ও গ্রামের নারীরা সহযোগিতা করে থাকেন।
সকাল থেকে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারীরা বাহারি পোশাকে সজ্জিত হয়ে হাজির হন বাবুরঘোনে। সেখানে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান, কৌতুক, গীত, গম্ভীরাসহ হারানো দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। দুপুরে পান্তাভাত, লবণ, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, মাছ, আম দিয়ে সজিনার ডাটা খাবারের স্বাদে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
প্রতিবছর মমতাজ বেগম গ্রামবাংলার পুরোনো সংস্কৃতি নতুনদের সামনে তুলে ধরতে পিঠাপুলি, পোষালু উৎসব, নদী থেকে কলসিতে পানি আনা, গুটি খেলা, ঢেঁকিতে নতুন ধানের চাল কুটা আর যাঁতায় আটা পিষা, বিয়ের আদলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গীত গাওয়াসহ নানা আয়োজন করে থাকেন। তার এসব আয়োজন দেখতে ছুটে আসেন, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা।
আয়োজনে আসা পঞ্চম শ্রেণীর শিশু শিক্ষার্থী জাইদা রহমান বলেন, নববর্ষ উদযাপন করতে এসে খুব ভালো লাগছে। শাড়ি পরেছি, মাথায় ফুলের তোড়া দিয়েছি। নাচ ও গান করেছি। পান্তাভাতের সঙ্গে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজ তৃপ্তিসহকারে খেয়েছি। মমতাজ ম্যাডামের জন্য আনন্দ পাচ্ছি।
রহনপুর জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবা সাত্তার বলেন, মমতাজ বেগম পুরোনো কৃষ্টি-কালচার নতুনদের কাছে তুলে ধরতে এই উৎসব পালন করেন। তিনি কখনো বিরক্তবোধ করেন না। উদ্দীপনার সঙ্গে আয়োজন করে থাকেন। চেষ্টা করি, তার উৎসবগুলোতে অংশগ্রহণ করতে। এখানে এলে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ভেসে আসে। তবে গ্রামীণ সংস্কৃতিগুলো আজ বিলুপ্তির পথে, বলেন তিনি।
শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নতুনদের কাছে তুলে ধরতে প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালন করে থাকি। আয়োজন দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ আসেন। এতে ভালো লাগে। গ্রামের লোকজন, শিক্ষার্থী ও দেখতে আসা মানুষ আমাকে উৎসাহ দেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে পুরনো সংস্কৃতি। প্রতিবছরই উৎসবগুলো আয়োজন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। একদিন আগে নববর্ষ উদযাপন প্রসঙ্গে মমতাজ বেগম বলেন, পহেলা বৈশাখ জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে নানান কর্মসূচি থাকে। এজন্য আগের দিন এই আয়োজন করে থাকি।