ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে কারিমা খাতুন (২৬) নামে এক নারীকে এক বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কারও কাছে বিচার চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে গুম করার হুমকি দেয় বলে জানান ওই নারী। তবে বিচারের আশায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও আশ্বাস ছাড়া, বিচার পাননি তিনি। অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় ওই নারীর। তিনি দুই সন্তানের জননী। এরপর বাবার বাড়ি ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর গ্রাম থেকে মহারাজপুরে এসে ভাড়া বাড়িতে থেকে, বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও পারটেক্স ফার্নিচার কারখানায় রান্নার কাজ করতেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মেলার মোড় এলাকার ডলফিন ফার্মেসি ও শিশির পারটেক্স ফার্নিচার ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেনের (২৫) সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর প্রেমের সম্পর্ক। এরই সুত্র ধরে ওই নারীর নিকট ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেই সাদ্দাম হোসেন, এসব তথ্য জানান নাসির ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী নাসির আলি। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে একাধিক স্থানে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সাদ্দাম হোসেন। ওই নারী সাদ্দামকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা শুরু করে। এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও নির্যাতিতা ওই নারী আশ্বাস ছাড়া কোনো বিচার পাননি। অবশেষে সাদ্দামকে অভিযুক্ত করে ভুক্তভোগী ওই নারী সদর মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু একটি মহল ওই মহিলাকে আশ্বাস দেন মামলা না করে, আপোষ মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযুক্ত সাদ্দাম। জানা যায়, সাদ্দাম হোসেন জেলার সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ভাগ্যবানপুর-নামোগাঁ গ্রামের মোঃ নুরতাজ আলির ছেলে। বর্তমানে তিনি মহারাজপুর নিজ এলাকায় স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাসায় থাকেন। নির্যাতিতা নারী কারিমা খাতুন জানান, বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিলে বিভিন্ন ভাবে কসম কেটে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন সাদ্দাম। এভাবে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তাদের প্রেম ও যৌন সম্পর্ক চলতে থাকে। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে থানা পুলিশের ভয় দেখালে, সাদ্দাম তাকে বলে আমার ফাঁসি হয়ে গেলেও তোকে বিয়ে করবোনা। সাদ্দাম আরও বলেন, তোকে যদি বিয়ে করতেই হয়, আমার টাকা আছে তোকে ফুঁ দিয়ে বিয়ে করে ফুঁ দিয়ে আবার তালাক দিয়ে দিবো। পারলে তুই আমার কিছু করিস। আর এ ব্যাপারে তুই যদি কারও কাছে যাস, তাহলে তোকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব। অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন জানান, ওই নারীর সঙ্গে আমার প্রেম বা বিয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। এই নারী আমার পারটেক্স ফার্নিচার কারখানায় শ্রমিকদের রান্নাবান্নার কাজ করতো। আমার ব্যবসার উত্থান দেখে একটি কুচক্রী মহল পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর জন্য ঐ নারীকে ব্যবহার করছে। তবে বিভিন্ন সময় তার বাড়িতে গিয়ে বাজার সদাই ও ওষুধসহ বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করতেন তিনি। তিনি আরও বলেন চেয়ারম্যান মেম্বার ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আপোষ মিমাংসা প্রক্রিয়ার চেষ্টা করছি। এগুলো নিয়ে লিখালিখি না করার জন্য এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন। মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নাহিদ ইসলাম (রাজন) জানান, আমি একজন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, এমন কোনো বিচার-শালিস করবোনা যাতে করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এবিষয়ে শুনেছি তবে, ইউনিয়ন পরিষদে এধরণের শালিস করা হবে না। বাইরে কেউ আপোষ মিমাংসা করে দিলে আমার করার কিছু নাই বলেও জানান তিনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, এ বিষয়ে শুনেছি, তবে অভিযোগ এখনো পায়নি। যদি পায় তাহলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।