জোহরু ইসলাম জোহির,নাচোল(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)ঃ- চাঁপাইনবাববগঞ্জের নাচোল পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়া আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর ৩০ শে ডিসেম্বর ৫ বছর পূর্ন হতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। নাচোল পৌরসভার ভোট আগামি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অনুষ্টিত হতে পারে নির্বাচন কমিশনের সা¤প্রতিক এমন ঘোষণার পর মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু আওয়ামীলীগ থেকে আবারো মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। ভোটারদের কাছে না গিয়ে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিতে ঘন ঘন ঢাকায় ছুটছেন। কিন্তু বর্তমান পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর বিরুদ্ধেই গত ৫ বছরে নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় জমেছে। অসদাচরণ, কাঙ্কিত সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়া, অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার অভাব, বরাদ্দ ও প্রকল্পের টাকার বেশির ভাগ লোপাট,টেন্ডার ও নিয়োগ বাণিজ্য,কর্মীদের বিনা কারণে ছাটাই,পৌর কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয়হীনতা ও পৌরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে চরম উদাসীন থেকে নিজের আখের গুছিয়েছেন ঝালু খান। শুধু তাইনা পৌর আওয়ামীলীগ কর্মীদের সাথে ও রয়েছে তাঁর সমন্বয়হীনতার অভাব। পৌর সভায় নিয়োগ বানিজ্য কে কেন্দ্র করে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ও রয়ছে। আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত হওয়া পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো নাচোল পৌরবাসীর খাবার পানির সংকট দূর করা। নাচোল পৌরসভার ভোট হওয়া পাঁচ বছর পূর্ন হতে চলেছে তারপর ও মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু পৌরবাসীর খাবার পানির সংকট লাঘব করতে পারিনী। রমজান মাসে এমনকি নিত্যদিনে ভোটারদের পানির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়। সাধারণ জনগন পৌরসভার ট্যাপ লাইন থেকে একদিন পানি পেলেও পরের দিন পানির জন্য ছুটতে হয় অন্যত্র। পৌরসভার নাগরিক মজিবুর রহমান,মানিরুল,কাজল অভিযোগ করে বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন তৈরির কারণে বর্ষার সময় পৌরবাসী কাদাপানিতে ডুবে থাকছেন। সড়কে বাতি ও নেই। যততত্র পড়ে থাকতে দেখা যায় ময়লার ভাগাড়। ৫ বছরে আমরা মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর কাছে যে উন্নয়নের আশা করেছিলাম তা আশানুরূপ হয়নি। পৌর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আতাউর রহমান জানান,আমরা দলীয় ভাবে ৫ বছরের জন্য অনেক কষ্ট করে আওয়ামীলীগ থেকে নাচোল পৌর মেয়র পদে আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু কে নির্বাচিত করেছিলাম। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পৌর আওয়ামীলীগ কর্মীদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই বললেই চলে। আমরা সাধারণ নাগরিকরা এই ৫ বছরে পৌরসভায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন পাইনি মেয়রের কাছে। পানির সংকট থেকে এখনও লাঘব পাইনি আমরা। উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন কে কেন্দ্র করে তিনি আওয়ামীলীগের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন। পৌর আওয়ামীলীগের ৮ নং ওয়ার্ডের সভাপতি হেলাল উদ্দিন লিটন জানান, আমরা পৌরবাসী মেয়রের কাছে থেকে নাগরিক সু্বধিা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা সাধারন জনগন কোন সেবাই পাইনি পৌর মেয়রের কাছে থেকে। বরং তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর নাচোল পৌরসভার অবনতি হয়েছে। পৌর আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতা কর্মীদের সাথে তাঁর কোন যোগাযোগ নেই। পৌর ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানাউল্লাহ জানান,এই ৫ বছরে আমি পৌর মেয়রের কাছে থেকে সেরক কোন উন্নয়নমূলক বরাদ্ধ পাইনি। যার কারনে আমার ওয়ার্ডে সেসরকম কিছু জনগনের উন্নয়ন করতে পারিনি। যেটুকু পেয়েছি উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের কাছে পেয়েছি। আমরা কলার গাছ হিসাবে কাউন্সিলর রয়েছি। একই কথা মহিলা কাউন্সিলর ফিরোজা খাতুনের। নাম না প্রকাশ করার শর্তে আরেক কাউন্সিলর জানান,আমাদের শুধু মিটিং এ অংশ গ্রহন করারই ছিলো প্রধান কাজ। পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালুর কাছে থেকে আমরা কাউন্সিলররা সেরকম কোন উন্নয়নমূলক কাজ পাইনি। কাজের টেন্ডার কখন হয়,না হয় তা আমরা জানিনা। মেয়র কিছু কাজ নিজেই কোটেশনে টেন্ডার নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। প্যানেল মেয়র ফারুক আহম্মদ বাবু জানান,আমার ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে সাতশ নাগরিকের বসবাস। অথছ আমার ওয়ার্ডে কোন কাজই সেরকম হয়নি। অনেক কাঁচা রাস্তা কাঁচাই রয়ে গেছে। দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি নাচোল পৌরসভায়। পৌরসভার সাধারণ ভোটাররা জানান,মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নাচোলে বেড়েছে অবৈধ স্থাপনা,যততত্র অবৈধ গাড়ি পার্কিং। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার দু বছরের মাথায় হঠাৎ করে পৌর কর বৃদ্ধির কারনে জনসাধারনের তোপের মুখে পড়তে হয় এই পৌর মেয়র কে। তাছাড়া পৌর এলাকার অনেক কাঁচা রাস্তা এখনও পাকা হয়নি বলে জনসাধারণের অভিযোগ। নাচোল পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু কে আবারও মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে দলের ভরাডুবির ব্যাপক আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তৃনমূল আওয়ামীলীগের কর্মীরা। উন্নয়নমুখী সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়নে পৌর মেয়র ব্যর্থ হয়েছেন। ভাবমূর্তি সংকটের কারণে দলের ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।