হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের লাখাইয়ে হাওড়ে স্বামীর সামনে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে লাখাই উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোলায়মান হোসেন রনিসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুজন হলো উপজেলার মোড়াকড়ি গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া (২১) ও রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (১৯)।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) ও বৃহস্পতিবার পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। লাখাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলো, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোলায়মান হোসেন রনি, উপজেলার মোড়াকড়ি গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া (২১), রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (১৯), মোড়াকরি গ্রামের বাসিন্দা খোকন মিয়ার ছেলে মুছা মিয়া (২৬), পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া (২৩), মিজান মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৫), ওয়াহাব মিয়ার ছেলে মুছা মিয়া (২০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৫ আগস্ট রাকিব আহমেদ তার স্ত্রী ও বন্ধু রকিবকে নিয়ে নৌকা ভ্রমণের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। বেলা ১২টার দিকে তাদের নৌকা কৃষ্ণপুর গ্রামের পাশে টিক্কাপুর হাওড়ে পৌঁছালে ইঞ্জিনচালিত আরেকটি নৌকায় করে আসামিরা তাদেরকে ঘেরাও করে। এ সময় মুছা মিয়া, সুজাত মিয়া, জুয়েল মিয়া ভিকটিমের স্বামী, স্বামীর বন্ধু ও নৌকার মাঝিকে প্রচণ্ড মারধর করেন। নৌকার মাঝি নিতেশ দাসকে খুনের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক হাওরের স্লুইচগেইট নৌকাটি নিয়ে যেতে বাধ্য করেন। সেখানে নিয়ে গিয়ে আসামিরা ওই নববধূকে ধর্ষণ করেন। একইসঙ্গে ভিডিও ধারণ করে। এরপর ৯ লাখ টাকা না দিলে এসব ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেয়। মামলা-মোকদ্দমা কিংবা লোক জানাজানি করলে তাদেরকে হত্যা করে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তারা।
রাকিব আহমেদ জানান লোকলজ্জা ও ধর্ষকদের ভয়ে ভুক্তভোগীকে পার্শ্ববর্তী নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওযায় ১ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে লাখাই থানা অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ অভিযুক্ত শুভকে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া র্যাব-৯ বুধ ও বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে রনি ও মিঠুকে গ্রেফতার করেছে।
হবিগঞ্জ হাসপাতালের আবসিক মেডিকেল অফিসার মঈন উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন গৃহবধূ সুস্থ রয়েছেন। তবে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। ইতোমধ্যে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।