শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন

ফুলবাড়ীতে শীতের তিব্রতা বাড়ায় লেপ-তোষক তৈরির ধুম

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৩ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। কয়েকদিন ধরে এ জেলাজুড়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। দুপুরের দিকে সূর্য উঠলেও থাকছে না সূর্যের তেজ। বিকেল গড়াতেই কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। রাতের গভীরতার সঙ্গে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। কয়েকদিন সর্বনিম্ন ৯ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিস।

এদিকে কনকনে শীত পড়ার সাথে সাথে শীত নিবারণে কাজের চাপ দেখা দিয়েছে লেপ-তোষকের দোকানে। কাজের বায়না নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপতোশক কারিগররা।

এবার গত বছরের তুলনায় লেপ তৈরির উপকরণ কাপড় ও তুলার দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে দোকানির সঙ্গে ক্রেতাদের বাড়তি কথা বলতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের ভূমি অফিস রোড গামারগলি এলাকায় ধুপ-ধাপ শব্দ। এ শব্দ তুলাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জট ছাড়ানোর। তারপর তুলাকে কাপড়ে ভরে সুই-সুতা দিয়ে সেলাই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে লেপতোশক কারিগরদের কর্মযজ্ঞ।

লেপতোশক কারিগরিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাপাস তুলা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, যা গত বছর ছিল ১৪০ টাকা। রুলের তুলা ১০ টাকা বেড়ে এবছর বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কালার তুলা ৫ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কালো তুলা ৭টাকা বেড়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং ফাইবার তুলা ২০ টাকা ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শিমুল তুলার দাম। গত বছর ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এবছর তা ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের মধ্যে চাহিদা রয়েছে স্বল্প দামের তুলার।

এছাড়া লেপ তৈরির লাল রঙের শালুকা কাপড় ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা গজ, মারকিন ৬০ থেকে ৭০ টাকা গজ ও পাট্টা কাপড় ৪০-৫০ টাকা গজ। প্রতি গজ কাপড়ে এ বছর বেড়েছে ১০-১৫ টাকা।

উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের খাজাপুর গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায় বলেন, গত বছর তুলা কিনে লেপ তৈরিতে খরচ পড়েছিল এক হাজার ৬০০ টাকা। এবছর সেই পরিমাণ তুলা দিয়ে লেপ তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। কাপড় ও তুলার দাম বেড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন নিম্নবিত্তরা।

পৌরএলাকার সুজাপুর গ্রামের মোকলেছুর রহমান বলেন, দিনদিন লেপতোশকের দাম বাড়তেই আছে। বাধ্য হয়ে কিনতেও হচ্ছে বেশি দামে উপায় তো নেই। তবে শীতের তিব্রতা বাড়লে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিয়ে মানুষকে জিম্মি করে বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়।

কারিগর সাইফুল ইসলাম বলেন, সারাবছর তেমন কাজ কর্ম থাকে না। তবে শীত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের কাজের চাপ বাড়ে। এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। তবে এ ব্যস্ততা সারাবছর থাকে না। শীতের কয়েক মাস কাজ বেশি হওয়ায় আয়ও বেশি হয়। দিনে ৬০০-৭০০ টাকা রোজগার হচ্ছে। বছরের অন্য মৌসুমে ২০০-২৫০ টাকা হয়। আবার কোনোদিন কাজই থাকে না। এ সময়টা অনেকে অন্য পেশায় চলে যেতে হয়।

আরেক কারিগর সুমন বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিনদিন তুলার কাজ কমে যাচ্ছে। ফলে অনেকেই এই পেশা থেকে অন্যপেশায় চলে যাচ্ছেন। শীত মৌসুমে প্রতিদিন জনপ্রতি প্রায় ৫০০ টাকা মজুরি হিসেবে পেয়ে থাকি। শীতের তিনমাস (ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) কারিগরদের কাজ থাকলেও বাকি সময় কাজের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তাদের ভিন্ন পেশায় রোজগার করতে হয়।

তুলা ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে কাপড় ও তুলার দাম। একই সঙ্গে বাড়েছে লেপ-তোষকের চাহিদা। তবে দামের কারণে বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com