যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত জাহান চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের সিনেট মেজরিটি লিডার চাক শ্যুমারের সুপারিশে তাকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়োগের মাধ্যমে প্রথম কোন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং প্রথম সাউথ এশিয়ান মুসলিম নারী যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতের বিচারক পদে নিয়োগ পেলেন। বেশ কয়েক বছর ধরে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (অ্যাকলু) আইনগত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
একইসঙ্গে জেসিকা ক্লার্ক এবং নীনা মরিসন নামের আরও দু’জন নারী ইউএস ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট এবং সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারকই প্রগতিশীল ঘরানার। ফেডারেল আদালতের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে তাদের নিয়োগ বিভিন্ন মহল থেকে অভিনন্দিত হচ্ছে। তিনজনেরই নাম হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নুসরাত জাহান চৌধুরীর বাবা-মায়ের নাম জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন তাকে নিয়ে ইতোপূর্বে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তাকে বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট পিতা-মাতার সন্তান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিনেট মেজরিটি লিডার চাক শ্যুমার ১ সেপ্টেম্বর তার ভেরিফাইড ফেজবুক পেজে নুসরাতের নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নুসরাত ইতিহাস সৃষ্টি করলেন বাংলাদেশি হিসেবে এবং দ্বিতীয় মুসলিম জজ হিসেবে-যিনি ফেডারেল কোর্টে বসবেন। মানবাধিকার এবং নাগরিক অধিকার সম্পর্কিত আইনে সম্যক ধারণা রাখা নূসরাত ইতোমধ্যেই নিজের বিচক্ষণতা প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছেন। একেবারেই শেকড় থেকে অপরাধের ধরণ নির্ণয় এবং অপরাধীকে যথাযথ শাস্তি প্রদানে তার এই অভিজ্ঞতা বিচার ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ রাখতে অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি।
নূসরাত জাহান চৌধুরী গ্র্যাজুয়েশন করেছেন বিশ্বখ্যাত ইয়েল ল’ স্কুল থেকে। অ্যাকলু’তে যোগদানের আগে তিনি নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের ক্লার্ক এবং সেকেন্ড সার্কিট ইউএস কোর্ট অব আপিলের জজ ব্যারিঙ্গটন পার্কারের সাথেও কাজ করেছেন। বর্তমানে ইলিনয় রাজ্যে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (অ্যাকলু) অ্যাটর্নি হিসেবে কর্মরত নুসরাত জাহান চৌধুরী। মানবাধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে ন্যায়বিচার নিয়ে কর্মরত ২০ জন অ্যাটর্নির একটি টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি।
এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি অ্যাকলু’র ন্যাশনাল অফিসে বর্ণবিচার বিষয়ক প্রোগ্রামের ডাইরেক্টর ছিলেন। এই নাগরিক অধিকার সংস্থায় সারা আমেরিকায় কর্মরত সকল অ্যাটর্নির মধ্যে নুসরাতকে শীর্ষস্থানীয় তিনজনের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।