
বিডি ঢাকা ডেস্ক
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদী ইউনিয়নের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখন পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাগুলোর খানাখন্দে ভরে গেছে, কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় দুই গ্রামের মানুষ।
চরাদি ইউনিয়নের রানীর হাট বাজার থেকে পশ্চিম চরাদি গ্রামের হয়ে সড়কটি সংযোগ হয়েছে রাজাখালী খেয়াঘাট হয়ে দবদপিয়া ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের সাথে। এবং চরাদী ইউনিয়নের হলতা বাজার থেকে মধ্য চরাদি গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটি সংযোগ হয়েছে বরিশাল দুমকি আঞ্চলিক সড়কের সাথে। জনঃ গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক ও ব্যবসায়ী যাতায়াত করেন। সড়ক দুটির মধ্যে হলতা বাজার সড়কটিতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আর রানীর হাট বাজার সড়কটির করুণ অবস্থার কারণে প্রায়ই মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন অনেকে।
মধ্য চরাদি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কে যানবাহন চলাচল না করায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে এই এলাকার শিক্ষার্থীরা। এই সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে শিক্ষার্থীদের পায় হেঁটে স্কুলে যাওয়া কষ্টকর হয়ে গেছে।
আরেকজন কৃষক বারেক হাওলাদার জানান, হলতা বাজার সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনে স্থানীয়রা চলাচলের জন্য সড়কের উপরে বাশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে। কোন প্রকার যানবাহন এই সড়কে চলে না। আমাদের কৃষি উৎপাদিত পণ্য প্রতিদিন হাটবাজারে নিতে হয় মাথায় করে। পাঁচ বছর ধরে আমরা চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই এই সড়ক উন্নয়নের।
সরেজমিনে দেখা যায়, হলতা বাজার হয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের ইটসোলিং উঠে গিয়ে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। সড়কটির পাশ দিয়ে চরাদি খাল বয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে একাধিক স্থানে বড় বড় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা চলাচলের জন্য ভাঙ্গনের স্থানে কাঠ দিয়ে মাচা তৈরি করে চলাচল করছে। সড়কটিতে পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যে কারণে মধ্য চরাদি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।
এছাড়াও রানিরহাট বাজার হয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটিতে দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটির প্রায় ৩ কিলোমিটারের অংশ ইটসোলিং উঠে গিয়ে কাঁচা মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে সড়কটি। সড়কে যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছে পশ্চিম চরাদি গ্রামের হাজারো মানুষ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, চরাদি ইউনিয়ন পরিষদ ও এলজিইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বহুবার বিষয়টি জানানো হলেও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে চরাদী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়ক দুটির বিষয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এলাকার জনগণের দাবি, দ্রুত রাস্তাগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হোক, না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো সময়।
এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাসনাইন আহমেদ জানান, চরাদি ইউনিয়নের এই সড়ক দুটির খোঁজখবর নিয়ে যেকোনো প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কার করা হবে।