ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা :ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেলেন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী। জেলার আশুগঞ্জ উপজেলায় এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আসামি ছাড়িয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত আবেদন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দেয়া আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তাণ্ডব চালানোর জন্য আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের বিএনপি সমর্থক দুলাল মিয়া লোক সরবরাহ করেন। বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবগত আছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার দুলালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ওই আবেদনে আরো বলা হয়, জোসনা চৌধুরী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দুলালকে ‘আওয়ামী পরিবারের সদস্য’ প্রত্যয়ন দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন, যা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য লজ্জাজনক। তিনি স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকদের আওয়ামী লীগে একে একে অনুপ্রবেশ করান। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার জন্য নিজেই একটি গ্রুপ তৈরি করেন জোসনা।
অভিযোগকারী শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেত্রী হয়ে জোসনার এমন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সেজন্য লিখিত অভিযোগ করেছি। এখন দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’
জানতে চাইলে আশুগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরী বলেন, ‘যার জন্য থানায় গিয়েছি,..দুলাল মিয়ার বাবা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। পুলিশের কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিল, তিনি বিএনপি করেন। যদি সে বিএনপি করে তাহলে প্রমাণ দেখানো হোক।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ। যারা আমাদের সঙ্গে চলাফেরা করছেন তাদের বিএনপির তালিকায় নাম দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। সে (দুলাল) নিরপরাধ মানুষ।’
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘আশুগঞ্জে আমি কথা বলেছি। এগুলো স্থানীয় অভিযোগ। এরা একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষ। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’