সত্যনারায়ন শিকদার,পশ্চিমবঙ্গ সংবাদদাতা : সাধারণ মানুষের বেশে স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন থানায় গিয়ে অভিযোগ জানালেন পুলিশ কমিশনার। উদ্দেশ্য- মানুষ থানায় গিয়ে ঠিকমতো সেবা পায় কিনা তা যাচাই করা। এ কাজে নেমে দুটি থানায় পুলিশের তৎপরতায় সন্তুষ্ট হলেও গাফিলতি পেয়েছেন একটি থানায়। ফলে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের পুনে শহরের। সেখানকার পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ প্রকাশ দেখতে চাইলেন নির্দেশনা দেওয়ার পরেও সাধারণ মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে কেমন পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। নিজে সেটি প্রত্যক্ষ করা জন্য সাথে নিলেন সহকারি কমিশনার প্রেরণা খাটেকে। ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে সাজালেন তার স্ত্রী। এরপর পুনের একের পর থানায় যেয়ে জানাতে লাগলেন অভিযোগ।
নিজের আসল পরিচয় গোপন করে মুখে নকল দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে একের পর এক থানায় হাজির হন কৃষ্ণ প্রকাশ। প্রতিটি থানায় তারা আলাদা অভিযোগের কথা বলেন। একটি থানায় তিনি অভিযোগ করেন- তার স্ত্রীকে কিছু বখাটে উত্ত্যক্ত করেছে। অন্য থানায় অভিযোগ করেন- ছিনতাই হয়ে গেছে তার স্ত্রীর সোনার চেন। পরপর দুইটি স্টেশনে তাদের অভিযোগের ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তবে অবহেলা দেখা যায় অন্য একটি থানায়। স্থানীয় পিমরি চিঞ্চোয়ার থানায় গিয়ে কমিশনার অভিযোগ করেন, কোভিড আক্রান্ত রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তাদের কাছ থেকে অনেক টাকা দাবি করছে। কিন্তু ওই থানার কর্তব্যরত অফিসার তার অভিযোগে সাড়া দেননি। বরং সেই অফিসার তার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। আর এ বিষয়ে তারা কিছু করতে পারবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।
এর পরই পুলিশ কমিশনার নিজের আসল পরিচয় দেন। ইতিমধ্যে ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কেন অভিযোগ নেওয়া হলো না, তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে ওই থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে।
রাজ্য পুলিশ কমিশনারের এমন ব্যতিক্রমী ও মহৎ উদ্যোগ প্রশংসা কুঁড়াচ্ছে সব মহলের। স্বাভাবিকভাবে প্রটোকল ভেঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কিছুই করেন না। সেখানে সাধারণ মানুষের কাতারে দাঁড়িয়ে তাদের অধিকারগুলো পরখ করে দেখার মতো সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন এ পুলিশ কমিশনার ও তার সহযোগী। অনেকেই বলছেন, এমন উদ্যেমী অফিসার প্রশাসনের সব ইউনিটে থাকলে উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ।