নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী নগরীজুড়ে স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন, শিরোইল ও ঢাকা বাস টার্মিনালকে সরিয়ে নওদাপাড়া স্থানান্তরসহ ১৭ দফা দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর তরুণরা।
‘ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানিয়েছ তারা।
এ নিয়ে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এবং নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম এবং নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমাকে স্বারকলিপির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, কোষাধ্যক্ষ রিনা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাশার রজন, কার্যনির্বাহী সদস্য শাওন ইসলাম এবং সাধারণ সদস্য জনি প্রমানিক যৌথ স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে ১৭টি দাবি জানানো হয়।
১৭ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো
(১) ইয়্যাস কর্তৃক প্রস্তাবিত ৩৪টি স্থানসহ নগরীতে রাস্তার পাশে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন; (২) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং নগরীর বিভিন্ন জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ স্থান, সড়ক ও মোড়ে পর্যাপ্ত জেব্রা ক্রসিং, ট্রাফিক নির্দেশিকা, স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল, নির্দিষ্ট স্টপেজ, যাত্রী ছাউনি ও নির্দিষ্ট পার্কিং জোন, ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) স্থাপনের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন; (৩) নগরীজুড়ে নিরাপদে চলাচল করার সুবিধার্থে সাইকেলসহ ছোট যানবাহনগুলো এবং ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থার জন্য পৃথক পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা; (৪) নগরীজুড়ে প্রবীণ-প্রতিবন্ধী ও নারী-শিশুবান্ধব ফুটপাত নির্মাণ ও ফুটপাতগুলোকে নিয়মিত সংস্কারের ব্যবস্থা করা; (৫) অপরিকল্পিত সব প্রকার যানবাহনের স্টপেজগুলোসহ শিরোইল বাস টার্মিনাল ও ঢাকা বাস টার্মিনালকে অবিলম্বে অপসারণ এবং নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল এ স্থানান্তর করা; (৬) শহরকে নিরাপদ ও নির্বিঘেœ করতে শহরের ভেতর দিয়ে দূরপাল্লার বাস-ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা; (৭) পথচারীদের নির্বিঘেœ চলাচল নিশ্চিতের লক্ষ্যে নগরীর সব ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করা।
অবিলম্বে সড়ক দুর্ঘটনারোধ এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করণে সড়কের অবকাঠামোর মান উন্নয়ন, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা ও সর্তকতা বৃদ্ধি এবং সড়ক পরিবহণ আইন দ্রুত বাস্তবায়নে উল্লেখিত দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী মহানগরীর শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে (রেলগেট) রাজশাহীতে প্রতিটি স্থানে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপনসহ ১৩ (তের) দফা দাবিতে ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাসের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর সেদিনই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক বরাবর ১৩ দফা দাবি সম্বলিত পৃথক পৃথক স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও গত ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইয়্যাসের পক্ষ থেকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরারব স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল।