সত্যনারায়ন শিকদার, পশ্চিমবঙ্গ : শুভেন্দু-শীলভদ্রের পর এবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে একে একে উল্টোসুরে তৃণমূল নেতাদের গলায়। তার জেরে নতুন করে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের অন্দরে। শনিবার দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। হরিদেবপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের দূর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি।
দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বনমন্ত্রী তোপ দাগার পরেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়ে গেরুয়া শিবির। রাজীবের প্রসঙ্গে রবিবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কখনও রাজীব বলছেন। কখনও অন্যরা। তৃণমূলের সবাই একে একে সরব হচ্ছেন। দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, রাজীবকে দলে স্বাগত। ভাল ছেলে। ভাল কাজ করেছিল। ওঁ দলে আসতে চাইলে স্বাগত। আর এই মন্তব্যের পরেই রবিবার সকাল থেকে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
শনিবার রাজীব উষ্মা প্রকাশ করার পরে মুখ খুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়ও। তিনি বলেন, যাঁরা প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করছেন আজ এটাই তাঁদের কথা। ঠিকই বলেছেন রাজীব।
এ দিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘রাজীব তৃণমূল ছাড়বে। তাই এই ধরণের কথা বলছেন। আমাদের দলে সবাইকে স্বাগত। কংগ্রেসের দরজা খোলা।’ এ দিকে, রাজীব প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আসলে কাজ করতে করতে সকলেরই হতাশা আসে। শূন্যতার কোনও স্থান নেই। দলনেত্রী সবার মাথার ওপরে রয়েছেন।’
এদিকে, রাজীব নিয়ে যখন জল্পনা চলছে, তখনই উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ঢাকল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পোস্টার-ফ্লেক্সে। রবিবার রাত থেকেই শ্যামবাজার, হাতিবাগান, গিরীশ পার্ক, কাঁকুড়গাছি, উল্টোডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার পড়তে শুরু করে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ ‘কাজের মানুষ-কাছের মানুষ’, ‘সততার প্রতীক’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। তবে কে বা কারা পোস্টার টাঙাল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চাপানউতোর।
উল্লেখ্য, উত্তর কলকাতার এই এলাকাগুলিতে দলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীর নামে পোস্টার লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এবার এই একই জায়গায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পোস্টার পড়েছে। তার জেরে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে শাসক শিবির তৃণমূল শিবির।