ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণ আত্মসাতের এই মামলার ১১ আসামির মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং দুইজনেক খালাস দিয়েছেন আদালত।
জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ আত্মসাতে ‘সহযোগিতার’ জন্য ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীমকে দেওয়া হয়েছে চার বছরের কারাদণ্ড।
এছাড়া ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী), ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিৎ চন্দ্র সাহা এবং তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়কে দেওয়া হয়েছে তিন বছর করে কারাদণ্ড।
আসামিদের মধ্যে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে খালাস দিয়েছে আদালত।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্কের ওপর শুনানি শেষ হয়।
উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর বিদেশে বসে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন এস কে সিনহা। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ফার্মার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে দুই ব্যবসায়ী শাহজাহান ও নিরঞ্জনের নামে ভুয়া নথি ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং আত্মসাৎকৃত অর্থ বিচারপতি এস কে সিনহার হিসাবে জমা দেওয়া হয়।
এ অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এস কে সিনহা ও অপর ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতি, ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) এ কে এম শামীম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফভিপি) স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) লুৎফুল হক, গুলশান শাখার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফভিপি) সফিউদ্দিন আসকারী, এস কে সিনহার পূর্বপরিচিত রণজিৎ চন্দ্র সাহা, রণজিতের স্ত্রী সান্ত্রী রায়, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা। এস কে সিনহা, সফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও সান্ত্রী রায় পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে মামলার শুনানি হয়।
তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় দুদক।
গত বছরের ১৩ আগস্ট ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আদেশ আসে।