ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পৌর এলাকার হরিপুর মিয়াপাড়ায় এক বাড়িতে মিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে দেয়াল চাপা পড়ে শফিকুল ইসলাম (২৫) নামে এক সুকেল কাটা মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (০২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে পৌর এলাকার হরিপুর মিয়াপাড়া গ্রামের সোহেল মিয়ার নিজ বাড়িতে দেয়াল চাপা পড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শফিকুল ইসলাম শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর-নামোটোলা গ্রামের মৃত সেমাজুল ইসলামের ছেলে। শফিকুল ইসলামের শ্বশুর আতাউর রহমান ও সোহেলের মামা এনামুল হক জানান, পাকা বাড়ির পায়খানার সুকেল নির্মাণের জন্য মাটিকাটার সময় পাশের দেয়াল ভেঙে শফিকুলের গায়ের উপর পড়ে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির অন্য সদস্যরা দেখেন, দেয়ালে চাপা পড়ে ঢেকে যান শফিকুল ইসলাম। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মো. সামসুল করিম রাজু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এখানে আসার আগেই শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সরজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের অভ্যন্তরেই করোনার কঠোর লকডাউনের সকল নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উভয় পক্ষের ৩০/৪০ জন প্রতিনিধি মাস্ক ছাড়া, সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে একে অপরের গায়ে গাঁদগাঁদি করে সালিশ করছে। এবং সালিশে কথোপকথনের মাধ্যমে এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ২ লাখ টাকায় দফারফা করে। এবিষয়ে জানতে চাইলে নিহত শফিকুলের শ্বশুর আতাউর রহমান বলেন, আমার জামাই দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছে, আর কিবা করার আছে? জামাইতো আর ফিরে আসবেনা তাই আপোষ করে নিয়েছি। বাড়ির মালিকের সাথে কত টাকায় দফারফা হয়েছে জানতে চাইলে অকোপটে বলেন আমাদের ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বার শুকুর আলি সহ উভয় পক্ষের প্রতিনিধির মাধ্যমে ২ লাখ টাকায় মিমাংসা করা হয়েছে। অপরদিকে, বাড়ীর মালিক সোহেল মিয়ার মামা এনামুল হকও এই ঘটনা ও ২ লাখ টাকায় দফারফার বিষয় নিশ্চিত করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অমিত কুমার পান্ডের নিকট জানতে চাইলে বলেন, শফিকুল ইসলাম দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল থেকে আমাদের হেফাজতে নেয়া হয়েছিলো। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিতে এডিএম মহদয়ের নিকট আবেদন করে অনুমতি নিয়ে এলে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি। এতে আমাদের করার কিছু নাই। ২ লাখ টাকায় বাড়ির মালিকের সাথে নিহতের পরিবারের দফারফার বিষয়ে কিছু জানেন কি না? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিনা বলে অস্বীকার করেন। মুঠোফোনে একই কথা বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাহফুজুল হক চৌধুরী।