অনলাইন নিউজ : ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ঘন ঘন বিদেশ সফর করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ তথ্য জানান বলে র্যাব জানায়।
শনিবার জানতে চাইলে র্যাব পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, আটকের পর থেকেই রাসেল দম্পতি একই কথা বলছেন, টাকা সব নষ্ট হয়ে গেছে। কীভাবে নষ্ট হয়েছে সেটারও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন যা মোটামুটি সত্য বলে ধরে নেয়া যেতে পারে। যেমন তার অফিসের প্রতি মাসে বেতন বাবদ ব্যয় হতো কমপক্ষে ৬ কোটি টাকা। এ হিসেবে আড়াই বছরেই তো টাকা চলে গেছে পৌনে দু শো কোটি। টেলিভিশনগুলোর টক শোতে থাকত ইভ্যালির লগো দিয়ে স্পন্সর। একইভাবে দেশব্যাপী ছিল বিলবোর্ড। এখাতেই তো শত শত কোটি টাকা অপচয় হওয়ার একটা সুস্পষ্ট খাত দেখা যায়। তবে এর বাইরে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন কি না সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখতে পারে।
তিনি বলেন, গত ফ্রেব্রুয়ারি থেকেই ইভ্যালির অ্যাকাউন্টসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড নজরদারি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে না থাকে তাহলে হয়তো হুন্ডি বা অন্য কোনো মেথডে হয়েছে। এটা নির্ভুলভাবে নিশ্চিত করতে পারে একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ওই দম্পতি খুব ঘন ঘন বিদেশ সফর করতো। সরাসরি বা অন্য চোরাই পথে টাকা পাচার করেছে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে এ দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির এক হাজার কোটি টাকার বেশি দায়-দেনা ছিল বলে জানায় র্যাব।
তারা বলে, কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণা করার পরিকল্পনা ছিল।
ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এ কথা জানায় র্যাব।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম ইভ্যালির সিইও ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেয়।
রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর বিকেলেই মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদের র্যাব সদর দপ্তর নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল বলেছেন, ইভ্যালির গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখেরও বেশি। শিশুদের নানা পণ্যের ব্যবসা ছেড়ে সামান্য পুঁজি নিয়ে রাসেল ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যনন্ত ইভ্যালির দায় ছিল ৪০৩ কোটি টাকা, যেখানে তাদের সম্পদ ছিল ৬৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন সংস্থার এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে রাসেল র্যাবকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।