সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৩৯২ বার পঠিত

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : নদী ও সাগর দ্বারা বেষ্টিত দ্বীপাঞ্চল রাঙ্গাবালী। ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে দেশের মানচিত্রে উপজেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এর পশ্চিমে রাবনাবাদ, পূর্বে তেঁতুলিয়া,উত্তরে আগুনমুখা ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। ৪৭০ দশমিক ১২ বর্গ কিলোমিটারের এ দ্বীপে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস।

উপজেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর থেকে-ই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ দ্বীপে। তবে এ জনপদের মানুুষের স্বপ্ন ছিল বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে দুর্গম উপজেলার বাসিন্দারা। ১১৪ মাস পরে নদীর তলদেশ দিয়ে ৯ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এ দ্বীপের মানুষের বিদ্যুতের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ২৯ হাজার পরিবারের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতি রয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। দ্বীপে বিদ্যুতায়নের ফলে উন্নয়নের আমুল পরিবর্তন ঘটবে।

কোড়ালিয়া লঞ্চঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মোশারেফ জানান, একটা সময়ে তারা কুপি (চেরাগ) ও হারিকেনের আলোয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনা করতো। এরপরে সৌর সোলার মাধ্যমে আলোকিত হলো। তবে সে আলো বর্ষার মৌসুমে তেমন জ্বলতো না। তাদের দীর্ঘদিনের দাবী ও স্বপ্ন ছিল দুর্গম দ্বীপে বিদ্যুতের। তিনি আরো জানান বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। এবং তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের চিত্র পাল্টাবে।

সংযোগ প্রত্যাশী ইউনুস মৃধা জানান, বিদ্যুৎ ছিল আমাদের কাছে স্বপ্নের মত। আমাদের ভাবনায়ও ছিলনা বিদ্যুৎ পাবো।

চরমোন্তাজ এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মালেক জানান, এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বরফ কল স্থাপন হয়নি। ফলে মাছ নিয়ে বিপাকে পরতে হতো জেলেদের। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের ছোঁয়া লাগতেই কয়েকটি বরফ কল স্থাপন করা হয়ে। এতে জেলেরা বেশ উপকৃত হবে।

চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলমান আছে। বিদ্যুৎ সেবা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উন্নয়নের ধারায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (গলাচিপা-রাঙ্গাবালী) প্রকৌশলী মাইনউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে এবং নদীবেষ্ঠিত উপজেলায় ৯ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবালী উপজেলাকে  বিদ্যুতায়ন করতে পেরেছি। গত ৩১ আগষ্ট পরিক্ষামূলক ভাবে ১০ এমভি একটি উপকেন্দ্র চালু করেছি। এবং পর্যায়ক্রমে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলে যেকোন দিন আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ উদ্বোধন করবেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান বলেন, বিদ্যুতের চাওয়া দীর্ঘকালের হলেও, স্বপ্নেও কখনো ভাবিনি এ বছরই বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবো।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, ‘রাঙ্গবালী উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদ্যুয়ের উদ্বোধন করবে। কেননা রাঙ্গাবালী উপজেলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আবিষ্কার। তাই এ উপজেলার সমস্ত উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে নিয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com