জেলা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও একটি মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্ত ৪ আসামির কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশীট দিতেও ব্যর্থ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এনিয়ে অভিযুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও আদালতে চার্জশীট প্রদানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। রবিবার সকালে জেলা শহরের বিশ্বরোড মোড়স্থ মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিহতের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নিহত কামরুন নাহার পুতুলের মা ও রাজশাহী জেলার শাহমখদুম থানার সপুরা কুচপাড়া এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মোসা. রোজিনা খাতুন। এসময় তিনি বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের পর জামাই শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের বেনাউল ইসলামের ছেলে জাহিদ হাসান চঞ্চলকে ব্যবসার কাজে নগদ ৩ লক্ষ টাকা দেয়। অতঃপর আরো টাকার জন্য চাপ ও মেয়ের শশুর বাড়ির লোকজন সকলে তাকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। স্বামী, শশুর, শাশুড়ী কথায় কথায় গালমন্দ করতে থাকে ও আমার মেয়েকে বলে, “গলায় রশি দিয়ে বা বিষ খেয়ে মরতে পারিস না? তুই মরলে আরেকটা সুন্দর মেয়ে বউ করে নিয়ে আসবো।” এমন আচরণ সইতে না পেরে শশুর বাড়িতে সিড়ি ঘরের তীরের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে গত ৩০ জুন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আত্মহত্যা করে। হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, পরের দিন মামলায় পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে ৪ জনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আসামি করা হয়। এমনকি পরে হাতে পাওয়া ময়না তদন্ত প্রতিবেদনেও আমার মেয়ে কামরুন নাহার পুতুলের বাম কানের নিচে কালো দাগ ও বাম হাতের কব্জির উপরে পুড়া ক্ষত পাওয়া যায়। অথচ মামলার ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিস কোন আসামিকে গ্রেফতার করেনি। আমাদের ধারণা, প্রভাবশালী ও অর্থবৃত্ত সম্পন্ন পরিবার হওয়ায় পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বা নিতে পারছে না। এছাড়াও এতো সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এখনো আদালতে চার্জশীট দাখিল করছেন না। সংশ্লিষ্টদের নিকট আমি ও আমার পরিবার মেয়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে অভিযুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও আদালতে চার্জশীট প্রদানের দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য ও আ.লীগ নেতা আব্দুল হাকিম, নিহত কামরুন নাহার পুতুলের মামা ও মামলার বাদি রুবেল আলী, নিহত পুতুলের মেয়ে জিমি আকতারসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।