সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

আলুর ফলন ও দামে খুশি বরেন্দ্রের চাষিরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৭২ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়ায় এবার বরেন্দ্রভূমি রাজশাহীতে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলনের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাজারেও চাঙ্গা আলুর দাম। এতে হাসি ফুটেছে বরেন্দ্রের ক্ষুদ্র আলু চাষিদের মুখে।

চাষিরা বলছেন, এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। সঙ্গে খরচও বেশি। আলুর দাম কমলে মাথায় হাত পড়তো। এবার আলুর দাম ভালো আছে। এতে খুশি চাষিরা।

চাষিরা বলছেন, গত অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের আলু বীজ রোপণ মৌসুম শুরু হয়। ৬৫-৭০ দিনে আগাম জাতের এ আলুর ফলন হয় ৪৫-৫০ মণ প্রতিবিঘা জমিতে। তারপর জমি থেকে আলু তুলে হাটে ও বাজারে বিক্রি শুরু হয় আগাম আলু। আমন ধান কেটে নামলা জাতের (পরে লাগানো) আলুর উৎপাদন বিঘা প্রতি ৮০ মণ থেকে ৯০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ায় আগাম জাতের আলুতে কৃষককে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এ বছর আলুর চাষ হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর আলুর চাষ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৬৫১ হেক্টর জমিতে। তবে গত বছরের তুলনায় এই বছর আলুর চাষ ১ হাজার ৬৯৬ হেক্টর কমেছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ ২৬ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন। রাজশাহীতে চাহিদার কয়েকগুণ আলু উৎপাদন হয়। এ কারণে যোগানে তেমন কোনো ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছে কৃষি দপ্তর।

তানোর উপজেলার চাঁনপুর এলাকার কৃষক আক্কাস আলী জানান, তার নিজের ১০ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড জাতের আগাম আলুর বীজ চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬৫ মণ। তিনি বর্তমান বাজারে ২৩ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। ফলে তার বিঘাপ্রতি লাভ পাচ্ছেন ২০-২৫ হাজার টাকা।

তানোরের আলু চাষি কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বিঘায় আলু উৎপাদনের খরচ বাদ দিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে যে দামে বিক্রি হয়েছে তাতে গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে এই অঞ্চলের কৃষকরা ৫২ টাকা কেজি দরেও আলু বিক্রি করেছেন। এখন প্রতি কেজি আলু ২৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২৩ টাকা দরে বিক্রি করেও ভালো লাভ থাকছে।

সরেজমিনে জেলার পবা ও তানোর উপজেলার বিভিন্ন আলু চাষের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ত সময় কাটাছে আলু তোলা শ্রমিক, চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তবে জমি থেকে আলু তোলাকে কেন্দ্র করে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ হয়েছে।

তানোর পৌরসভার চাঁনপুর এলাকার নিচ বিলের কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আলুর উৎপাদনের খরচ বাদ দিলে লাভ থাকবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরুতে এই অঞ্চলের কৃষকরা ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন। এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। প্রথম দিকে জমি থেকে আলু আগাম তোলায় উৎপাদন কম হয়েছিল। তবে দাম বেশি হওয়ায় তাতে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে আলুর দাম কম বলছেন তারা। গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমে আলু উৎপাদনের খরচ বেড়েছে অনেক বেশি।

তানোর উপজেলার চাঁনপুর এলাকার কৃষক মামুন অর রশিদ জানান, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘায় আলু পেয়েছেন ৫০ মণ। তবে এই আলু আরও ৩০ থেকে ৩৫ দিন পরে জমি থেকে তুললে ৬০ থেকে ৬৫ মণ পাওয়া যেত। সেসময় এখনকার মত দাম নাও পাওয়া যেতে পারে, তাই আগাম আলু তুলে বাজারজাত করছেন তারা।

কৃষক আক্কাস আলী জানান, ১০ বিঘা জমিতে ডাইমন্ড জাতের আলু চাষ করেছেন তিনি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬০ মণ। তার দাবি, প্রথম দিকে আলুর দাম ভালো ছিল। তখন বাজারে ৫০ থেকে ৫২ টাকা প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তাদেরকে আরও কম দামে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হয়।

আলু ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, সোমবার ব্যবসায়ীরা আলু কিনেছেন প্রতি কেজি ২৪ টাকা দরে। আর রোববার ছিল প্রতি কেজি ২৩ টাকা। আলুর দাম বাড়তে শুরু করেছে। তবে আলুর দাম কম হলে চাষিরা আলু তুলছেন না। আলু আমদানির খবরের দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, আলুর দাম কমেছিল। কিন্তু দুই তিন পর থেকে আবার আলু দাম বাড়তে শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে আলু তোলা হচ্ছে সেগুলো ৭০ থেকে ৭৮ দিনের। এই আলু ওজনেও কম। আবার দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গত বছর মৌসুমের এ সময়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছিল ১০ থেকে ১১ টাকা দরে। এ বছর প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। তাই তুলনামূলক দাম বেশি ।

শুক্রবার নগরীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে খুচরায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। নগরীর মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বিনোদপুর বাজারে আলু কিনতে এসে জানান, কৃষকরা বলছেন দাম নেই। ব্যবসায়ীরা বলছে বেশি দামে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। তাহলে ক্রেতারা কি বলবে? ব্যবসায়ীরা যে দামে ক্রেতাদের আলু খাওয়াচ্ছেন ক্রেতারা বাধ্য হয়ে সেই দামেই খাচ্ছেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। বাজার মনিটরিং দরকার।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানান, জেলার বাগমারা ও তানোর উপজেলার কৃষকরা আগাম আলুর চাষ বেশি করে থাকেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে আলুর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু আগাম আলু চাষ করে কৃষক দামও ভালো পাচ্ছেন। এবার আশা করা যাচ্ছে- আলুতে লোকসান হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com