ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়ক ও জেলার স্থানীয় সড়ক গুলোয় দুর্ঘটনায় এখন যেন মৃত্যুর ম্যারাথন রেসে পরিনত হয়েছে । তথাকথিত ম্যারাথন দৌড় বা রেস সাধারণত একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে শুরু হয়ে একটা নির্দিষ্ট দুরত্বে গিয়ে পৌছানোর কথা বলে দেয়া হয়। দুরত্বটা হোকনা তাতে ৫, ১০, ১৫, ২০ কিংবা ততোধিক মাইল বা কিলোমিটার। তাতেও মনে শান্তনা আসে এই বলে যে, দুরত্ব যায় হোক এর শেষ তো আছে। কেউ আগে, কেউ পরে, কেউ আবার পথিমধ্যে থেমে যেতে পারে। তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু ২০২০ সনের শেষের কয়েক মাস এবং ২০২১ এর শুরু থেকেই যেন জেলার বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে সড়কপথে মৃত্যুর ম্যারাথন রেস শুরু হয়ে গেছে। এইতো ১৮/০২/২০২০ তারিখে সকাল থেকে রাতের শেষ ভাগ পার না হতেই পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে ঝরে গেলো তিন তিনটি তরতাজা তরুণের প্রাণ। এ খবর তো নাগালের মধ্যে। কিন্তু মফস্বল সড়ক বা রাস্তার খবর তো অজানাই থেকে গেছে। এইতো কয়েকমাস পূর্বেই সোনামসজিদের সন্নিকটে দাইপুকুরিয়া-শাহবাজপুর দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী আঞ্চলিক সড়কের বারিকবাজার নামক স্থানে করিমন উল্টে মারা গেছে ৯ জন। তার কয়েকদিন আগে কানসাট-চৌডালা সড়কে মৃত্যুর মিছিলে আরও ৩ জন। আর সম্প্রতি এই তিন তরুণের সড়ক দুর্ঘটনায় পরপারে চলে যাওয়াটা যেন জেলাবাসীর “কাটাঁ ঘায়ে লবনের ছিটা” র মতো খুব পীড়া দিয়েছে। আর কত-শত জনের পঙ্গুত্ব বরণের কথা আর কয় জনের বা জানা আছে? আর সারা দেশের কথা না হয় বাদই দিলাম। এই মৃত্যুর ম্যারাথন রেস এর শেষ কোথায়? এবং কিভাবে থামবে তাও আমাদের অজানা। এমন ভয়ানক, কষ্টদায়ক অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার কি কোন উপায় কারো জানা আছে? নাকি যেভাবে চলছে, সেভাবে চলতে থাকবে। আর আমরা নির্বাক! বোবা ভাষার কান্না হয়ে নিরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে যাবো? নাকি দায় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য শুনতে হবে-গুনতে হবে আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন। স্বজন হারাদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা যেনো আমার কিংবা আপনার কারো নেই। হে মহান করুনাময় আল্লাহ তায়ালা সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণকারী সকল ভাই বোনদের শহীদের মর্যাদা দিয়ে কবুল করে নাও, এটাই দোয়া করি মন প্রাণ থেকে জেলাবাসীর সাথে আমিও। জেলার সচেতন মহলের দাবি ও আকুল আবেদন, এসকল দূর্ঘটনার কথা ভেবে ট্রাফিক বিভাগের সচেতনতা বৃদ্ধি করে কঠোর হয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে যেনো, ট্রাক্টর, করিমন, নসিমন, ভুটভুটি, ট্রলি, অটোরিকশা ও সড়কে উড়ন্ত গতিতে ছুটে চলা সিএনজির গতিরোধ করে বন্ধ করে দেয়া হয় এসব অবৈধ যান। সেই সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে সড়ক ও জনপথ এবং এলজিইডি বিভাগের নিম্নমানের, দায়সারা ও খামখেয়ালিপনা কাজের বিরুদ্ধে। এবং রাস্তার ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করতে হবে শক্ত ভাবে। তাহলেই হয়তো ব্যস্ত সড়ক গুলোয় যানজট দূর হবে ও অনেকাংশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হবে। সেই সাথে বেপরোয়া গতিতে প্রতিযোগিতার মধ্যে, পথ পাড়ি দেয়া ট্রাক, বাস গুলোর গতি কমানোর কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণ, পুলিশ প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জেলাবাসী।