নিজস্ব সংবাদদাতা:রাজধানীর উত্তরা এলাকায় থাকেন হাফিজুর রহমান (ছদ্মনাম)। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ শুরুর দিন বুধবার তার ইচ্ছা হলো শিং মাছ খাওয়ার। সে জন্য মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাসা থেকে রওনা হন রাজধানীর মালিবাগের উদ্দেশে।
বাসা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের গন্তব্যে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন হাফিজুর। কিন্তু পথে বাগড়া দেয় পুলিশ। হাফিজুর পুলিশ সদস্যদের তার মুভমেন্ট পাস দেখান, যা তিনি নিয়েছিলেন বাজার করার জন্য। কিন্তু তাতে মন গলেনি পুলিশের। ট্রাফিক পুলিশের কর্তব্যরত সার্জেন্ট মনে করেছেন, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে শিং মাছ কিনতে উত্তরা থেকে মালিবাগ যাওয়াটা পাসের অপব্যবহার। আর সেই অপব্যবহারের জন্য জরিমানা গুনতে হয় হাফিজুরকে।
সরকারি আদেশ অমান্য করার অভিযোগে রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের সামনে বসানো চেকপোস্টে হাফিজুরকে জরিমানা করা হয় তিন হাজার টাকা। বেলা ১১টার দিকে রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে হাফিজুরকে জরিমানা করেন সার্জেন্ট শেখ যোবায়ের আহমেদ।
সার্জেন্ট বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করছি। একজন মানুষ উত্তরা থেকে মালিবাগ শিং মাছ কিনতে যাচ্ছে- এটা কোনোভাবেই জরুরি কাজ হতে পারে না।’
শুধু হাফিজুর নন, পুলিশের বিবেচনায় মুভমেন্ট পাসের অপব্যবহার করা অনেকেই গুনেছেন এমন মামলা। সে অঙ্কটা কমপক্ষে তিন হাজার টাকা।
তবে এসব জরিমানা শুধু যারা প্রাইভেট কার, মাইক্রো বা মোটরসাইকেলের মতো ব্যক্তিগত যান ব্যবহার করছেন তাদেরই করা হচ্ছে। দরকার ছাড়া হেঁটে বা রিকশায় চড়ে যারা বের হয়েছেন তাদের পাস না থাকলে বাসায় ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন বুধবার সকাল থেকেই মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ। উদ্দেশ্য মানুষকে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা। সকাল ১০টা পর্যন্ত মানুষের চলাচল কিছুটা কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন কারণে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। তবে গণপরিবহন ও অন্যান্য যানবাহন বন্ধ থাকায় রাজধানীর সড়কগুলো ফাঁকা ছিল। তবে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি চলছে। সঙ্গে ছিল রিকশাও।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মুভমেন্ট পাস সবাই পাবেন না। শুধু জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দেয়া হবে এ পাস। যিনি পাস পাবেন শুধু তিনিই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে টিকা গ্রহণ, মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচাবাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা, চাকরি, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসা ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে মুভমেন্ট পাস দেয়া হবে।