নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশব্যাপী চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে পবিত্র রমজানের প্রথম শুক্রবার রাজধানীর মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি।
করোনার বিস্তার রোধে মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এদিন মানতে দেখা যায়নি। মোহাম্মদপুর, পান্থপথ, কলাবাগান ও ফার্মগেট এলাকার বেশ কয়েকটি মসজিদে একই চিত্র দেখা যায়।
মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার সংলগ্ন শহীদ পার্ক জামে মসজিদে দেখা গেছে কয়েক হাজার মুসল্লি সমবেত হয়েছেন। মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে অনেককে মসজিদের বাইরেও নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।
মসজিদের মাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায়ের কথা বলা হলেও সেখান সেই পরিবেশ দেখা যায়নি।
মোহাম্মদপুরেরে অন্যান্য মসজিদগুলোর মধ্যে আল্লাহ করিম জামে মসজিদ, বাইতুস সুজূদ জামে মসজিদ, বাইতুর রহমান জামে মসজিদেও একই চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে জুমার নামাজে সামাজিক দুরত্ব না থাকলেও বেশিরভাগ মুসল্লিদের মুখে মাস্ক দেখা গেছে। এছাড়া জুমার নামাজের আলোচনায় করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক ও সরকারের বিধি নিষেধ মেনে চলার ব্যাপারে ইমামগণ গুরুত্ব আরোপ করেন।
তবে নামাজ শেষে ইমামের সেই আহবান বেমালুম ভুলে গেলেন মুসল্লিরা। জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিটি মসিজিদের সামনে ভ্যান গাড়ি কিংবা ঝুড়িতে সবজি, ফলসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বসেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। করোনার এই কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যেও একই চিত্র দেখা গেছে। নামাজ শেষ হতেই অনেক মুসল্লি ভিড় করেন মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সেইসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে। কেউ সবজি কিনছেন তো কেউ কিনছেন শাক। আবার কেউ ফল কিনছেন। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি উপক্ষা করে নামাজ শেষে এমন কেনাকাটায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণে। অনেক জায়গায় মসজিদের সামনের রাস্তায় দোকানিদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। তবে বেশিরভাগ মসজিদের সামনে ছিলো দোকানিদের দীর্ঘ সারি।
গত বছরের মতো এবারও করোনা মহামারিতে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ের নতুন নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন অংশ নিতে পারবেন। তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন এবং জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নেবেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ডস্যানিটাইজার/ হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে যেতে হবে।’
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না মানা হলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।