অনলাইন নিউজ : বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। দক্ষিণ এশিয়ার জনবহুল দেশ ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে বিপর্যস্ত। সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৪ হাজার ৪৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৮০ হাজার ৪০৬ জন।
শনিবার (১ মে) সকাল ৮টায় আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে মোট ১৫ কোটি ২০ লাখ ২ হাজার ৩৬৫ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১২ কোটি ৯২ লাখ ৭১ হাজার ৪৭ জন।
বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩১ লাখ ৩ হাজার ৯৭৪ জন। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৯০ হাজার ৫৫ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ১৪২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন শনাক্ত রোগী ৫৮ হাজার ৮২০ জন এবং মারা গেছেন ৭৭২ জন।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় এর পরেই রয়েছে ভারত। গত কয়েকদিন ধরে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখেরও বেশি রোগী। একই সময়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৫২২ জন করোনা রোগী।
এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৪ জনের। মোট মৃত্যু বেড়ে দাাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৮৩৫। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৫৬ লাখ ৭৩ হাজার ৩ জন।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ২৮৭ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩৮ জন।
চতুর্থ স্থানে থাকা ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৬ লাখ ১৬ হাজার ৬৮৯ জন রোগী। এরমধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৫১৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ১৮৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ২৭৬ জন আর শনাক্ত ২৪ হাজার ২৯৯ জন।
রাশিয়াকে টপকে শনাক্তের দিক দিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তুরস্কের নাম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৪৮ লাখ ২০ হাজার ৫৯১ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৪০ হাজার ১৩১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪৩ লাখ ২৩ হাজার ৮৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৩৯৪ জন আর শনাক্ত ৩১ হাজার ৮৯১ জন।
ফলে করোনাভাইরাস শনাক্তের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে রাশিয়া। এরপরে সপ্তম স্থানে যুক্তরাজ্য, অষ্টম স্থানে ইতালি, নবম স্থানে স্পেন এবং দশম স্থানে রয়েছে জার্মানি।
সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম। দেশে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন ১১ হাজার ৪৫০ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪২৬ জন রোগী।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।