সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : ঈদের ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতি সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে হাজারো মানুষদের এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাক-পিকআপ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসে মানুষ গন্তব্যে গেলেও সেটা কেবলই হাতেগোনা। একেকটি ট্রাকে যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ জন করে যাত্রী। এতে একদিকে যেমন অমানবিক কষ্ট তার ওপর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে অনেকগুণ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হতে কড্ডা, নলকা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত দেখা গেছে সব জায়গাতেই যাত্রী নিতে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক ও পিক-আপ। এর মধ্যে কড্ডা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা যেন ট্রাক স্ট্যান্ডে রূপ নিয়েছে। আর এতেই উঠে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক-পিকআপে হাজার হাজার যাত্রী যাচ্ছে।
কড্ডা এলায় ট্রকে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে আলিম, সোলেমান, রহমত আলী, সোহেল রানা সহ শত শত মানুষ। এছাড়াও পরিবার নিয়ে গাজীপুর যাবার চেষ্টা করছে মো. জাফর ইকবাল নামে এক গার্মেন্টস কর্মী। তারা বলেন, এখান থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ট্রাকে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। আমরা ৩০০ করে বলেছি তবু নিচ্ছেনা।
তারা আরো বলেন, কর্মস্থলে যেতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তবে এভাবে ট্রাকে গেলে তো করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি বললে তারা বলেন, করোনা হবেই এটাতো শিওর না। আর হলেও হয়তো বেঁচে থাকবো কিন্তু চাকরি হারালে পরিবার নিয়ে এমনিতেই না খেয়ে মরতে হবে। তবে যেহেতু ট্রাক পিক-আপ যাত্রী নিয়েই চলছে তাই বাস বন্ধ করে রাখাটা উচিৎ হয়নি বলেও জানান তারা।
এদিকে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস কিছু আসলেও সব দূরপাল্লার বাস ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে মহাসড়ক ঘুরে কোথাও কোনো যানজট বা তেমন কোনো ধীরগতি দেখা যায়নি।
হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা থেকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার এসআই আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, আমরা দূরপাল্লার বাস আসলেই ফিরিয়ে দিচ্ছি। তবে মহাসড়কে অন্যান্য গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধীরগতি বা যানজট নেই।
মহাসড়কের কড্ডা এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আব্দুল গণি বলেন, মহাসড়কে মানুষের প্রচুর চাপ আছে তবে দূরপাল্লার বাস চলতে না দেয়ায় ট্রাক-পিকআপে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। এধরণের গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই। মহাসড়কে ঈদ পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে ও সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।