নিজস্ব সংবাদদাতা : বরগুনা থেকে ঢাকায় এসে প্রথমে হোটেল বয় এবং পরে ভ্যানে ফেরি করে পোশাক বিক্রি করতেন ছগির হোসেন (৪৭)। এরপর হয়ে যান বড় ব্যবসায়ী। বাস্তবে ব্যবসার আড়ালে জাল নোট তৈরি ও বাজারজাত করাই ছিল তার প্রধান কাজ। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। সোমবার রাতে রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তার সঙ্গে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলো- ছগির হোসেনের সহযোগী সেলিনা আক্তার পাখি (২০) ও রুহুল আমিন (৩৩)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার জাল নোটসহ ৫টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ৩টি প্রিন্টার, ১টি হ্যান্ড এয়ারড্রয়ারসহ জাল নোট তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত ছগির ও ইদ্রিস ২০১৭ সালেও গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু তারা জেল থেকে বেরিয়ে আবারও জাল টাকা তৈরির কারবারে জড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মিডিয়া বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাবের মিডিয়া পরিচালক মঈন জানান, বছরখানেক জেল খেটে ছগির পুনরায় ২০১৮ সাল থেকে জাল নোট তৈরি শুরু করে। তৈরিকৃত জাল নোটগুলো তার চক্রে থাকা অন্য সহযোগী গ্রেফতারকৃত রুহুল আমিন, সেলিনা ও অন্যান্য ৭-৮ জনের মাধ্যমে বিক্রয় করে আসছিল। শীতকালীন বিভিন্ন মেলা, জনসমাগম অনুষ্ঠান, বিশেষ করে পূর্বাচলে আয়োজিত বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তারা তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। তারা সবাই বিভিন্ন সময়ে জাল নোটসহ গ্রেফতার হয়েছে। তাদের মধ্যে আঁখির স্বামী এখনও জাল নোটের মামলায় কারাগারে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এর আগে গত ২৮ নভেম্বর র্যাব-৪-এর একটি দল মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকার মূল্যমানের জাল নোটসহ জাল নোট তৈরি ও বিক্রয়কারী চক্রের সক্রিয় ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে এই চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
কমান্ডার মঈন বলেন, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা ও বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় এই জাল নোট তৈরি করে বিভিন্ন লোকের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে আসছিল। চক্রের সঙ্গে ১৫-২০ জন সদস্য জড়িত রয়েছে। তারা এসব জাল নোট তৈরির উপকরণগুলো পুরান ঢাকা থেকে সংগ্রহ করত। প্রতি লাখ জাল নোট ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত চক্রের সদস্য ছগির। এতে তার খরচ হতো মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা। ছগির মাঠ পর্যায়ে জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়া ব্যক্তিদের প্রতি মাসে বোনাস দিত। তারা জাল নোট তৈরির পর ধরা পড়ার আশঙ্কায় অব্যবহৃত অংশ পুড়িয়ে ফেলত।
এ জাতীয় আরো খবর..