ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর হলো অটো রাইস মিলের শ্রমিক অধ্যুষিত শহর। এই শহরে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ প্রতিনিয়ত আগমন ঘটে। তাই গ্রীষ্মকালীন কেনাকাটা করতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় জমে। এর ফায়দা লুটার জন্য কিছু অসাধু ফল ব্যাবসায়ী ফাঁদ পেতে তরমুজ ফল পিস হিসাবে ক্রয় করে কেজি দরে বিক্রি করায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের ক্রয়ের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাণিজ্যিক শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে দাম হওয়ায় তরমুজ না কিনেই হতাশ মনে ফিরে যাচ্ছে অনেক ক্রেতা। বিগত বছরগুলোতে সদর উপজেলার সর্বত্রই তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি করতে দেখা গেছে। চলতি মৌসুমে বাজারে তরমুজের পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রোজার আগে যেই তরমুজ প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সেই তরমুজ রোজার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। আগে ৫ কেজির একটি তরমুজের দাম ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ এখন ৫ কেজির একটি তরমুজ কিনতে গুনতে হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মতো। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সঙ্গে দাম নিয়ে দর কষাকষি করছেন। একপর্যায়ে তারা বিবাদেও জড়িয়ে পড়ছেন। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই অনেক ক্রেতা কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছে দোকানির কাছে। এ নিয়েও চলছে বাগবিতন্ডা। তরমুজ কিনতে আসা শহরের রাজারামপুর এলাকার হাই স্কুলের শিক্ষক শাহ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। অতিরিক্ত দামের কারণে তরমুজ কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বাজারে প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই অব্যবস্থাপনা। আমার মতো আরও অনেকে তরমুজ কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। নয়াগোলা এলাকার রুমন মেকার বলেন, তরমুজ কিনতে এসে মাথা ঘুরে গেলো, তরমুজ খাওয়া বর্জন করতে হবে তাহলেই তরমুজ সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে। শহরের বড় বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফল ব্যবসায়ী জানান, আড়ৎদাররা পাইকারি বাজার থেকে তরমুজ শ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। ফলে আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজির কাহিনী উন্মোচন হবে বলে মনে করছেন। অপরদিকে পরিবারের জন্য প্রিয় ফলটি না কিনতে পেরে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ থেকে অনেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সাধারণ ক্রেতারা কেজি দরে তরমুজ বিক্রিকে ভোক্তাদের সঙ্গে বড় রকমের প্রতারণা ও চালবাজি-তেলেসমাতি আখ্যায়িত করছেন। কেজিদরে তরমুজ কিনতে চাচ্ছেন না তারা। আবার কেউ কেউ তরমুজ বয়কটের শ্লোগানও দিচ্ছেন।