ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড মোড়ে বুধবার (১৩ জানুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বস্তাবন্দি ৪/৫ টি জবাইকৃত প্রাণীর মাংস আটক করেও স্থানীয় জনতার সামনেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে মালিককে মাংস সহ অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ ও সেনেটারি ইন্সপেক্টর কোবাদ আলি। সরজমিনে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, এসআই আবু হাসান, এএসআই নয়ন ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সেনেটারি ইন্সপেক্টর কোবাদ আলি সহ স্থানীয় জণগণ ঐ মৃত প্রাণী গুলোর মালিককে আটক করে রাখে। আটককৃত প্রাণীর মালিক রাজশাহী শহরের দর্গাপাড়া মহল্লার সেলিম শেখের ছেলে কসাই আফসার আলি (৪৩)। তিনি জানান, আমি একজন কসাই, জবাইকৃত প্রাণী গুলো ছাগলের, তবে কম মূল্যে কিনে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে জবাই করে বস্তাবন্দি করে নিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন হোটেলে এভাবেই বিক্রি করে থাকি বলেও অকপটে জানান তিনি। প্রাণী গুলোর মাথা ও পায়ের ক্ষুর নাই কেনো প্রশ্ন করলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি। এসআই আবু হাসান জানান, আমরা এই মাংস কোন প্রাণীর সনাক্ত করতে না পারলেও দেখে মনে হচ্ছে ছাগলের। শনাক্ত না করে ছেড়ে দিলেন কেনো জানতে চাইলে বলেন, প্রাণী গুলোর মালিক খুব গরিব এবং পেশায় কসাই। এভাবেই জবাই করে ফিজআপ করে নিয়ে যায়, তাই মানবিক কারণে সকলের উপস্থিতিতে ছেড়ে দিয়েছি। প্রাণী গুলো সত্যি ছাগলের না অন্য প্রাণীর কিংবা মৃত না জীবিত অবস্থাই জবাই করা হয়েছিলো কি না? এমন প্রশ্ন করা হলে স্বপক্ষে কোনো উত্তর না দিয়ে ওসি (অপারেশন) মিন্টু রহমানের সাথে কথা বলতে বলেন এসআই আবু হাসান। সদর থানার ওসি (অপারেশন) মিন্টু রহমান মুঠোফোনে জানান, এবিষয়ে আমাদের করার কিছু ছিলোনা, কারণ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছি বলে জানান। অপরদিকে, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা কোন সহযোগিতা না করে দায়সারা কথা বললে আমরা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। এদিকে, জেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর কোবাদ আলি বলেন, বস্তাবন্দি জবাইকৃত প্রাণীগুলো ছাগল না অন্য প্রাণীর কিংবা জীবিত না মৃত অবস্থায় জবাই করা হয়েছে আমাদের প্রমান করার কোন ব্যবস্থা নাই। পরীক্ষা করার জন্য একটি ছাগলের রান রেখেছি বলেও জানান তিনি। জবাইকৃত প্রাণীর মাংস ও মালিককে ছেড়ে দিয়ে এখন পরীক্ষা করে কি করবেন প্রশ্ন করলে কোন সদুত্তর না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। স্থানীয় বিশ্বরোড মোড়ের চা বিক্রেতা শওকত আলি, ডিম বিক্রেতা তাজেমুল সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বস্তায় প্রাণী গুলোর মাথা ও পায়ের ক্ষুর অক্ষত ছিলোনা। তাই কোন ভাবেই প্রাণী গুলো কিসের ও জীবিত না মৃত জবাই করা হয়েছিলো সনাক্ত করা যাইনি। পুলিশ ও সেনেটারি ইন্সপেক্টরের যোগসাজশে দফারফা করে পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই মৃত বস্তাবন্দি জবাইকৃত প্রাণীর মাংস সহ মালিককে ছেড়ে দিয়েছে বলেও জানান তারা।