নিজস্ব সংবাদদাতা : সরকারের অনুমতি প্রাপ্তির পরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। শুক্রবার (৭ মে) রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। এখন এটি সরকারের বিষয় তারা কবে নাগাদ বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে।
চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ বলেন, এখনো খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। যখন অনুমতি আসবে তখন হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড এই ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। বর্তমানে তিনি সিসিইউ’তে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং আগের মতোই তার চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছে মেডিকেল বোর্ড। তার অবস্থা বৃহস্পতিবারের ন্যায় স্থিতিশীল আছে।
সরকারের অনুমতি পেলে বিমানে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা বিএনপি চেয়ারপারসনের আছে কি-না জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, তার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, এটি আপনারা জানেন। সরকার কীভাবে তাকে যাওয়ার অনুমতি দেবে, সেটি এখন সরকারের বিষয়। বর্তমানে তিনি দেশের স্বনামধন্য একটি হাসপাতালে এবং দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসকদের গঠিত বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন।
দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা দোয়াও চেয়েছেন তিনি।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। গত ২৭ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ১৫ দিনের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে চেস্টের সিটি স্ক্যান ও হৃদরোগের কয়েকটি পরীক্ষার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা তাকে করোনারী কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করে। প্রতিদিনই তাকে কয়েক লিটার অক্সিজেন গ্রহণ করতে হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরার পর গত ১০ এপ্রিল থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।
দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিন বছর আগে কারাগার যেতে হয়েছিলো ৭৬ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিতসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।