কক্সবাজার সংবাদদাতা : করোনার মহামারির পর কক্সবাজারের উন্মুক্ত সৈকতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ঢল নেমেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে পর্যটকরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ ছুটিতে কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা মিলেছে। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে ৭ স্তরের বিশেষ ব্যবস্থা।
করোনাকালীন পরিস্থিতির কথা ভুলে গিয়ে সৈকতে হৈচৈ আর আনন্দ করে সময় কাটাচ্ছে পর্যটকরা। করোনা সংকট না থাকায় মনের আনন্দে ঘুরতে পারার অনুভূতি জানালেন আগত পর্যটকরা। কখনো কালো মেঘ, কখনো সাদা মেঘ, কখনো হালকা বৃষ্টি এরকম বৈরি পরিবেশের মাঝেই ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল নেমেছে।
গত ২ ঈদে ঝিমিয়ে থাকা পর্যটনে আবার প্রাণ ফিরে এসেছে এ ঈদের টানা ছুটিতে। গত ২ বছর আসতে না পারা পর্যটকরা এবার ভিড় জমিয়েছে সৈকতে। পর্যটকরা সমুদ্র স্নানে, বালিয়াড়িতে ঘোরাঘুরি, ছাতায় বসে সমুদ্রের অপার সৌন্দর্য আর প্রকৃতি উপভোগ করেছেন নিজেদের মতো। দেশিদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও রয়েছে।
পর্যটকদের আগমনে খুশি ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সবেমাত্র পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। এ ভিড় ক্রমাগত বাড়বে, ৭ মে পর্যন্ত। পর্যটকদের এ আগমনে করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ব্যবসায়ীরা। তারা এখন পর্যটক সেবায় নিয়োজিত।
আগামী ৭ মে পর্যন্ত পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত থাকবে কক্সবাজার। এই পাঁচ দিনে অন্তত ১২-১৫ লাখের মতো পর্যটক সমাগমের কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার। তিনি আরও এই সময় হোটেল, রেস্তোরাঁসহ পর্যটনের অন্য খাতে ব্যবসা হবে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার।
এদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার সমুদ্র সৈকত এলাকায় সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ১টি ওয়াচ টাওয়ার এবং ৭টি পর্যবেক্ষণ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছে লাইফগার্ড। এছাড়া পর্যটক ও দর্শনার্থীদের তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৬টি ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি হেল্প ডেস্কে ফাস্ট এইড বক্স সরবরাহের মাধ্যমে পর্যটকদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রসৈকত, হোটেল-মোটেল জোন, ঝাউবন এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছিনতাই প্রতিরোধ, ইভটিজিং বা পর্যটক হয়রানি রোধে সার্বক্ষণিক বিচ বাইক, ওয়াটার বাইক, মোটরসাইকেল পেট্রোলিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ জানান, ঈদে বাড়তি পর্যটকের কথা মাথায় রেখে ঈদের আগে বৈঠক করা হয়েছে হোটেল মালিকদের সঙ্গে। কেউ যাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করেন তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।