ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা :ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া ও বাবার সম্পদ একাই ভোগ করার লোভে পরিকল্পিতভাবে বড় ভাই শাকিল আহমেদ ওরফে ভোলাকে (৩৫) হত্যা করেছে ছোট ভাই সাব্বির হোসেন (৩২)। ভাবি মীম খাতুন (২০) দেবরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্বামী হত্যায় সরাসরি অংশ নেন। গত ২৮ মে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজসংলগ্ন রূপনগর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, ঈশ্বরদী মুলাডুলি ইউনিয়নের দুবলাচারা (পতিরাজপুর) এলাকার ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে ঈশ্বরদী বাজারের কাগড় ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ ভোলার স্ত্রী মীম খাতুনের সঙ্গে ভোলার ছোট ভাই সাব্বির হোসেনের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ভোলা ও তার স্ত্রী মীম এবং নিজ পরিবারের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এরপর বাবার জমি-জমা ও পুকুরে মাছ চাষ নিয়ে দুই ভাই ভোলা ও সাব্বিরের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। একপর্যায়ে স্ত্রী মীমকে নিয়ে ভোলা শহরের কলেজ রোডের রূপনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় ওঠেন। ভাবি মীমের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায় দেবর সাব্বিরের। ভাইয়ের অগোচরে ভাবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ভাবি মীমকে মোবাইল কিনে দেয় সাব্বির।
এরপর ভাই ভোলা বাসা থেকে বের হলেই মোবাইলে যোগাযোগ করে বাসায় ঘনিষ্ঠ হয় দেবর সাব্বির ও ভাবি মীম। বিষয়টি ভাই ভোলা জানতে পারে। তাই ভাবির সঙ্গে সম্পর্ক স্থায়ী করতে ও বাবার সম্পদ একা ভোগ করতে ভাবি মীমের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়ে প্রথমে ভোলাকে অচেতন করা হয়। পরে স্ত্রী মীম ও ছোট ভাই সাব্বির মুখে বালিশ চেপে বড় ভাই ভোলাকে হত্যা করে।
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় নিহত শাকিল আহমেদ ভোলার বাবা কোরবান আলী মালিথা বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নিহত শাকিল আহমেদ ওরফে ভোলার স্ত্রী মীমের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে নিহত শাকিল আহমেদ ওরফে ভোলার ছোট ভাই সাব্বির হোসেনকে আটক করা হয়।
এ হত্যার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি-না তা জানার জন্য নিহত শাকিলের ছোটভাই সাব্বিরকে চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আর স্ত্রী মীমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।