বিডি ঢাকা ডেস্ক
কুড়িগ্রামের উলিপুরে টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়ে পড়েছে নতুন নতুন এলাকা সহ নিম্নাঞ্চল।
শুক্রবার (৫ জুলাই ) সকালে পাউবো জানায়, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্রের উলিপুর হাতিয়া পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমা দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
নদ-নদীর তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলের বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়ছে মানুষজন। অনেক পরিবার গবাদিপশু সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মৌসুমী ফসলের ক্ষেত। কাঁচা পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত ৫ হাজার পরিবারের বিশ হাজার মানুষ।
উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বাবলু মিয়া সরকার জানান, বানভাসীদের জন্য এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্দ পাইনি। তবে উপজেলা প্রশাসন আমার ইউনিয়নে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে বানভাসিদের মাঝে ৩শ জনকে পাঁচ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমির হোসেন জানান, উপজেলায় ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দী। এর মধ্যে চেরাগের আলগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খুদিরকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ২৩ টি বিদ্যালয়ে এখনো পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে ওই সব প্রতিষ্ঠানে এসএমসি সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।
এছাড়াও ইতোমধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে দু,টি স্কুল। গুজিমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ নং খামার দামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, বানভাসিদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলায় ১৫টি টিম কাজ করছে। এক একটি টিমে ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য আছে।
উলিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলা জানান, বানভাসিদের জন্য ৩৩ মেট্রিকটন চাল ও এক লক্ষ আশি হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, ব্রহ্মপুত্র সহ অন্যান্য নদ নদীর পানি আরও ২৪ ঘন্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান, উদ্বুদ্ধ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।