জামালপুর সংবাদদাতা : একযুগ ধরে শিকলে বন্দি জামালপুরে সোহেল । ধুলোবালি মাখা শরীর, পায়ে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। বাড়ির আঙ্গিনায় একটি পিলারের সাথে। শুধু মায়াভরা দু’টি চোখ দিয়ে ফ্যাল-ফ্যাল করে এদিক-ওদিক তাকিয়ে থাকে। এই তীব্র শীতে পরনে পাতলা কাপড়ের একটি শার্ট ও লুঙ্গি । শীতে শরীর কাটা কাটা হয়ে উঠেছে। জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের খাঁয়ের পাড়া গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন সোহেল (২৩) এভাবেই কাটছে তার জীবন। (১১ ডিসেম্বর) তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,বাড়ির আঙ্গিনায় একটি পিলারের সাথে শিকল পায়ে মাটিতে বসে আছে সোহেল। দিনে পিলারের সঙ্গে শিকলে বেধেঁ আর রাতে গোয়াল ঘরের চৌকির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় সোহেলকে। প্রায় ১৩ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটছে সোহেল। সোহেলের মা বলেন, সোহেলের যখন সাত বছর বয়স হঠাৎ করেই তার খুব জ্বর আসে । চিকিৎসা পরে জ্বর ভালো হয়, তার পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে থাকে সোহেল। এরপর জামালপুর হাসপাতলে চিকিৎসা করা হয় , চিকিৎসার তারপর থেকে আরো বেশি হতে থাকে । পারিবারিক অস্বচ্ছতার কারণে আর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি সোহেলের। তার ১ বছর পর সোহেলকে আবার জামালপুর হাসপাতলে নিয়ে চিকিৎসা করা হয় কিছু দিন , টাকা পয়সা না থাকার কারণে সোহেলকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় । তিনি আরো বলেন, তার বাবা মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে।তার বয়স বর্তমানে ২৩ বছর। সম্পদ বলতে ভিটে-মাটি ছাড়া আর কিছুই নেই। কেউ যদি আমার ছেলের চিকিৎসায় এগিয়ে আসতেন, তবে হয়তো সে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারতো। ঘোষেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন,সোহেলের পরিবারের এখন চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য নাই । সোহেল উন্নত চিকিৎসা করা হলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে । মেরাজুল ইসলাম রবিন।