হার্ট অ্যাটাক করেছেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সুজাতা। তাকে জরুরি ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর ২ নম্বরে অস্তিত্ব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
তার শারীরিক অবস্থা বেশ গুরুতর বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে আজ বুধবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে। কয়েকদিন সুজাতাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লোককাহিনিনির্ভর চলচ্চিত্র ‘রূপবান’ দিয়ে বাংলার আপামর দর্শকের কাছে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পান। এরপর তাকে দেখা গেছে বহু কালজয়ী চলচ্চিত্রে।
অভিনয়ের বাইরে সুজাতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোট ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শিল্পী ঐক্য জোট, শিল্পী সংঘ, শিল্পী সমিতিসহ পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতির মতো নানা পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
অভিনয় জীবেনর শুরুটা করেছিলেন মঞ্চে। তখন তার নাম ছিলো তন্দ্রা মজুমদার। সিনেমা করতে এসে নাম বদলে সুজাতা হয়ে যান। তার নামটি বদলেছিলেন পরিচালক সালাহউদ্দিন। তার হাত ধরে মাত্র ১২ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে পা রাখেন সুজাতা। সেই সালাহউদ্দিনের হাত ধরেই ‘রূপবান’ সিনেমা দিয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান তিনি।
পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ার সুজাতার। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০টি ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন। সব মিলিয়ে তিনশতাধিক ছবির অভিনেত্রী তিনি।
সুজাতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের তালিকায় রয়েছে ‘রূপবান’, ‘ডাকবাবু’, ‘জরিনা সুন্দরী’, ‘অপরাজেয়’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘কাঞ্চনমালা’, ‘আলিবাবা’, ‘বেঈমান’, ‘অনেক প্রেম অনেক জ্বালা’, ‘প্রতিনিধি’ ইত্যাদি। ১৯৭৭ সালে নায়িকা হিসেবে সর্বশেষ রহিম নেওয়াজ পরিচালিত ‘রাতের কলি’ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।
সুজাতা পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র ‘অর্পণ’। স্বামীকে নিয়ে প্রযোজনাতেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি। সুজাতা-আজিমের নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থাগুলো হচ্ছে- ‘সুজাতা প্রোডাকশন্স’, ‘এস এ ফিল্মস’ ও ‘সুফল কথাচিত্র’। এ তিনটি প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে নির্মিত হয়েছে ‘চেনা অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘প্রতিনিধি’, ‘অর্পণ’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’সহ অসংখ্য ব্যবসা সফল ও নন্দিত চলচ্চিত্র।